যশোর মনিরামপুরে ধর্ষণচেষ্টার বিচার না পেয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, ইউপি সদস্যসহ আটক ৩

যশোর প্রতিনিধি 
যশোরের মনিরামপুর উপচেলার মনোহরপুরে মাতাব্বরদের সালিশে ধর্ষণচেষ্টার বিচার না পেয়ে পূর্ণিমা দাস নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। গত সোমবার বিকেলে মনোহরপুর ইউনিয়নের ঋষিপল্লীতে এঘটনা ঘটে। নিহত পূর্ণিমা দাস ওই পল্লীর সঞ্জিত দাসের স্ত্রী। এঘটনায় পুলিশ সোমবার রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম ফকিরসহ তিনজনকে আটক করেছে।পুলিশ জানায়, মনোহরপুরের ঋষিপল্লীর বাসিন্দা সঞ্জিত দাসের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী পূর্ণিমা দাসকে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিতো স্থানীয় কফিল ফকিরের ছেলে মিজানুর রহমান মির্জা ফকির। নিহতের স্বামী সঞ্জিত দাস জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তার স্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে রাত সাড়ে আটটার দিকে মিজানুর রহমান মির্জা ফকির বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু এসময় পূর্ণিমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে গেলে মিজানুর পালিয়ে যায়।
 বিষয়টি নিয়ে মিজানুর রহমান মির্জা ফকির, তার চাচাত ভাই ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম ফকির, গোলাম মোস্তফা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিপদ মণ্ডলসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিপদ মণ্ডলের নেতৃত্বে রোববার বিকেলে এলাকায় সালিশি সভার আয়োজন করেন। সঞ্জিত ও তার স্ত্রী ছাড়াও ওই বোর্ডে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিজানুর রহমান মির্জা ফকিরের চাচাত ভাই ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম, ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা, আবুল দপ্তরি, আসাদুজ্জামান, আবুল হোসেন সরদার, নওশের আলী, আল আমিন, ইলিয়াস হোসেনসহ এলাকার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী।
কিন্তু সালিশি বোর্ডে হাজির হননি অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মির্জা ফকির। ওই বোর্ডে উপস্থিত থাকা সঞ্জিত দাসসহ কয়েকজন জানান, সালিশি বোর্ডে মিজানুর উপস্থিত না হওয়ায় তার পক্ষে চাচাত ভাই ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম সঞ্জিত ও তার স্ত্রী পূর্ণিমার কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু সঞ্জিত ও পূর্ণিমা বিষয়টি মেনে না নিয়ে প্রতিবাদ করেন।ফলে সঠিক বিচার না পাওয়ার ক্ষোভে পূর্ণিমা দাস সোমবার বিকেলের দিকে ঘরের মধ্যে কিটনাশক পানে আত্মহত্যা করেন।
এদিকে গৃহবধূ পূর্ণিমা দাসের আত্মহত্যার খবর পেয়ে সোমবার রাতেই পুলিশ আটক করেন ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম, আবুল হোসেন সরদার ও আসাদুজ্জামান আসাদকে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ পূর্ণিমা দাসের মরদেহ উদ্ধারে পর ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটকের কথা জানান, মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নূর-ই আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন,এঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অন্য আসামীদের আটকের জন্য চেষ্টা চলছে।