মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলে খোদ যশোর শহরে অবাধে লাইসেন্স বিহীন মদ বেচাকেনার হিড়িক পড়ে গেছে। যশোরের পুলিশের কয়েকটি ইউনিট ও র্যাব এবং মাদকদ্রব্য বিভাগের কতিপর্য অর্থলোভী কর্মকর্তা ও সদস্যদের সাথে মাসে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে প্রাণঘাতি ভেজাল মদ বিক্রি হওয়ায় সেবনকারীদের পরিবার চরম জীবন আশংকায় ভূগছে। শহরের বড় বাজারের দু’টি স্পটে লাইসেন্স বিহীন প্রতিদিন প্রায় ৫শ’ লিটার মদ বেচাকেনার ফলে ওই সড়কে অবস্থিত ব্যবসায়ীরাও অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশ সুপারসহ খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি’র আশু হস্তক্ষেপ কামনা করলেও কাঙ্খিত কোন ফল পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলেছে,শহরের বড় বাজার বাবু বাজার ও গোহাটা রোডস্থ মাড়–য়াড়ী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় অবাধে লাইসেন্স বিহীন মদ বেচাকেনা হচ্ছে। যশোর সদর উপজেলার ৩নং ইউনিয়নের সাবেক ওয়ার্ড মেম্বর জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র খুব ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অবাধে সম্পূর্ন নিষিদ্ধ লাইসেন্স বিহীনভাবে মদ বেচাকেনা করছে। সূত্রগুলো দাবি করেছেন,জাকিরের নেতৃত্বে বড় বাজারের বাবু বাজার পতিতালয় সংলগ্ন ও তার আশপাশে মন্টু সাহা,আব্দুর রশিদ ও মাড়–য়াড়ী মন্দির সংলগ্ন পতিতালয়ের সামনে সাজু অবৈধভাবে মদ নিজের দখলে রেখে বেচাকেনা করছে। বছর কয়েক পূর্বে মাড়–য়াড়ী মন্দির সংলগ্ন পতিতালয়ের সামনে আবু হাসান ও বাবু বাজার এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র সম্পূর্ন নিষিদ্ধ ভেজাল মদের সাথে বিভিন্ন বিষাক্ত স্পিরিটসহ ট্যাবলেট মিশিয়ে লাইসেন্স বিহীন সেবনকারী কারীদের কাছে অবৈধভাবে বিক্রি করায় ১৫ দিনের ব্যবধানে বিষাক্ত মদ খেয়ে পর্যায়ক্রমে ১৯ জন তরতাজা প্রাণ ঝরে যায়। আক্রান্ত হয়ে আরো ১৬ জন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্নস্থানে চিকিৎসা নিয়েছে। সুত্রগুলো বলেছেন,ওই সময় ভেজাল ও বিষাক্ত মদ সেবন করে শহরের ভিডিও ক্লাব ব্যবসায়ী নুরু,যশোর শহরের ঘোপ এলাকার সাবুর হোসেন,গরীবশাহ মাজার এলাকায় মুন্না,বারান্দীপাড়ার মনি,কচুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকজন মারা যান। ভেজাল ও সম্পূর্ন অবৈধ মদ সেবন করে মৃত্যুর ঘটনায় কোতয়ালি থানায় তৎকালীন কর্মরত এসআই হারুন অর রশিদসহ নিহতর পরিবারে পক্ষ থেকে আবু হাসানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছিল।ওই মামলায় আবু হাসান স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। আবু হাসানের সাতে,কৃষ্ণ,কালো মিন্টু, রতনসহ ১৬ জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট সম্পূর্ন অবৈধভাবে লাইসেন্স বিহীন মদ বেচাকেনা করতো। সাবেক ইউপি মেম্বর ভেজাল মদক বিক্রেতা জাকির হোসেন দাবি করেছেন, যশোর কোতয়ালি থানায় কর্মরত পুলিশের পরিদর্শক পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তা,সদর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশের এক পরিদর্শক,জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি),মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক লায়েকুজ্জামান,উপ-সহকারী পরিদর্শক শাহীন পারভেজ,সিআইডি,র্যাবসহ পুলিশের কয়েকটি ইউনিটকে মাসে দেড় লক্ষাধিক টাকা উৎকোচ দিতে হয়। তার জন্য সে প্রতিদিন মদের দোকান হতে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা গ্রহন করে অবৈধ ও নিষিদ্ধ মদ বেচাকেনা করছে। যার কারনে পুলিশের সামনে জাকির হোসেন,মন্টু সাহা,আব্দুর রশিদ ও সাজুসহ তাদের মদদপুষ্ট কর্মচারীরা মদ বেচাকেনা করছে। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান,বিষাক্ত মদ সেবন করে গরীব ও মধ্য বিত্ত পরিবারের আয়ের এক মাত্র সক্ষম ব্যক্তি প্রতিদিন যা আয় করছেন তার বেশী অংশ মদ সেবনের পিছনে ব্যয় করছেন। যার ফলে সামাজিক ও সাংসারিক অবক্ষয় ঘটছে অবৈধভাবে মদ সেবন করার ফলে। নিন্ম বিত্ত ও মধ্য বিত্ত পরিবারের সদস্যরা যাতে করে শহরের মধ্যে ভেজাল ও সম্পূর্ণ লাইসেন্স বিহীন মদ বিক্রি বন্ধ হয় তার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ যশোরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।