যশোর ঝিকরগাছার কুমড়ী গ্রামের নুরুল হককে গুমের মামলায় আদম ব্যবসায়ী আনিসুরের ১৩ বছর কারাদন্ড 

যশোর প্রতিনিধি 
যশোরের ঝিকরগাছার উপজেলার কুমড়ি গ্রামের নুরুল হককে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা গুমের অভিযোগে একই গ্রামের আদম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের আলাদা ধারায় ১৩ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক জয়ন্তী রানী দাস এক রায়ে এই আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আনিসুর রহমান ঝিকরগাছার কুমড়ি গ্রামের জামাত আলী মোড়লের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায় ১৯৯৩ সালে কুমড়ি গ্রামের নুরুল হককে কুয়েতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় একই গ্রামের আদম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান। নুরুল হকের চুক্তি অনুযায়ী প্রথমে ৫৪ হাজার পরে কুয়েতে পৌঁছে বাকি ২১ হাজার টাকা দেয়ার কথা ছিল আনিসুরকে। নুরুল হকের মা রওশনারা বেগমের সবকিছু বিক্রি কলে আনিসুরকে ৫৪ হাজার টাকা দেন। ১৯৯৩ সালের ২৫ জুন নুরুলকে কুয়েতে নেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকাতে নিয়ে যায় আসমি আনিসুর। এরপর থেকে পরিবার নুরুল হকের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। একপর্যালে নুরুল হাকে মা ছেলের শোকে ও অর্থ অভাবে ভিক্ষা করতে শুরু করেন।একর্পায়ে ছেলে নুরুল হককে ফিরে পেতে মা রওশনারা বেগম যশোর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। এর মাঝে রওশনারা মানসিক ভারস্যাম্যহীন হয়ে পড়ায় তৎকালীন যশোর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক অলিয়ার রহমান বাদী হয়ে ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি আনিসুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ৪২০ ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩৬৪ ধারায় ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আনিসুর রহমান কারাগারে আটক আছে।