শেরপুর প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গার্মেন্টসকর্মী শেরপুরের নকলার শফিক মিয়া (২৮) নারায়ণগঞ্জে গুলিতে নিহত হয়। আজ তার মরদেহ আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়েছে। দাফনের দুই মাস পর তাঁর মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়ের চিথলিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তোলা হয়।
নিহত শফিক ওই এলাকার জুলহাস মিয়ার ছেলে। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে শফিক ছিল মেঝো। সে সোনারগাঁও থানা এলাকায় মিনা গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করত। শফিক বিবাহিত এবং ৩ কন্যাসন্তানের জনক। মরদেহ উত্তোলনকালে শেরপুর জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওলিয়ার রহমান, নকলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাউল আলমসহ পুলিশ সদস্য, নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বিকেল ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেনপাড়া নামক স্থানে পাকা সড়কে শফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ওইদিন রাতে শফিকের লাশ বাড়িতে এনে পরদিন তাঁকে একটি পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে। পরবর্তীতে ২৩ আগস্ট নিহত শফিকের চাচাতো ভাই আবু হানিফ বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা (মামলা নম্বর-১৫, তারিখ-২৩/০৮/২০২৪ ইং) দায়ের করেন।
পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে কবর থেকে শফিকের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ কবর থেকে শফিকের মরদেহ তোলা করা হলো।
শফিক নিহত হওয়ার কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের চাকরি নেয়। এরপর থেকে তাঁর আয়েই চলতো এ পরিবারটি। একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে এখন দিশেহারা শফিকের পরিবার। শফিকের বাবা জুলহাস মিয়া পেশায় ছিলেন মাছ বিক্রেতা। তিনিও দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ। সন্তানকে হারিয়ে শোকে পাথর শফিকের মা, অবুঝ ৩ শিশুসন্তান নিয়ে দিশেহারা শফিকের স্ত্রী।