মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরায় দিনে-দুপুরে এক গৃহবধূর ওপর ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা হাজীপুর ইউনিয়ন আলাইপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গৃহবধূ তার বোনকে এগিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তার পাশে ওত পেতে থাকা একই এলাকার আলামিন মোল্যা ও মিল্টন মোল্যা নামে দুই যুবক গৃহবধূকে জোর করে রাস্তার পাশে জঙ্গলের ভেতরে নেওয়ার চেষ্টা করে। গৃহবধূ উত্ত্যক্তকারীদের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেতে থাকেন।
এক সময় তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। তার (গৃহবধূর) চিৎকার চেঁচামেচি শুনে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা রেখা রানী (আদিবাসি) এগিয়ে আসেন এবং চিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন। সবাই মিলে গৃহবধূকে রেখা রানীর বাড়িতে নিয়ে যায়। অনেকক্ষণ গৃহবধূর মাথায় পানি দেওয়ার পর তার জ্ঞান ফেরে। একটু সুস্থ হলে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
গৃহবধূ জানান, আমার বোন আমার বাড়ি বেড়াতে এসেছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে বাবার বাড়ির দিকে এগিয়ে দিতে যায়। যাওয়ার সময় দেখি আলামিন মোল্যা ও মিল্টন মোল্যা বাড়ির দিকে যাচ্ছে। বোনকে এগিয়ে দিয়ে চলে আসার সময় আমাকে ফাঁকা পেয়ে রাস্তায় পাশে ঘন জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারা আমার কাপড় চোপড় সব ছিড়ে ফেলেছে। শরীরে সব জায়গায় হাত দিয়েছে, নাক ফুল ও কানের দুল হারায় গেছে। আমি ওই খানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। জ্ঞান ফিরার পর জানতে পারি যে হিন্দুপাড়ার লোকজন মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করে। একটু সুস্থ হলে তারা আমাকে আমার স্বামীর বাড়ি পৌঁছে দেয়।
গৃহবধূর স্বামী সোহেল জানান, আমি গরীব মানুষ। ভ্যান চালাই খাই। টাকা-পয়সা নেই । আমার স্ত্রীর ওপর যে যৌন নির্যাতন হয়েছে, আমি তার সঠিক বিচার চাই।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার মো. খবির লস্কর এর কাছে অভিযুক্তদের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগেও ওরা ছাগল চুরি করেছে, গাড়ির ব্যাটারি চুরি করেছে। ওরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। এদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এদেরকে শাস্তির আওতায় আনা না গেলে, সমাজে বাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।
ভিকটিমকে উদ্ধারকারীদের একজন রেখা রানী জানান, আমি রাস্তায় ছিলাম, ওর (ভিকটিমের) চিৎকারে আমি দৌঁড়ে যায়। যেয়ে দেখি সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। আমি চিৎকার দিলে লোকজন জড়ো হয়। মাথায় পানি দেওয়ার পর তার জ্ঞান ফেরে। একটু সুস্থ হলে তাকে তার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি। দিনে-দুপরে নারীর উপর যৌন হামলায় আমরা মেয়েরা ভয়ে আছি।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, দুজনের বিরুদ্ধে যৌন উত্ত্যক্ত করার একটি অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে আলামিন মোল্যা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যৌন উত্ত্যক্ত ১০ ধারা মোতাবেক মামলার প্রস্তুতি চলছে।