ঢাকা অফিস: পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানো, বিএনপি সুপ্রিম কোর্টে যাবে এমন আভাস আগেই পাওয়া গিয়েছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেছেন।
ধবার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রিভিউ দায়ের করার বিষয় নিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সংবাদ সম্মেলন করবেন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান যুক্ত করা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই বিধানটি বাতিল করা হলে ২০১৪, ২০১৮ এবং সবশেষ গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে- যার প্রতিটি নির্বাচন নিয়েই দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ওই বছরের চার আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এরপর ২০০৫ সালে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ। আদালত এ মামলায় আট জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে তাদের মতামত শোনেন। এদের মধ্যে পাঁচ জন সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। এরা হলেন, ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ।
অপর আমিকাস কিউরি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে তাদের প্রস্তাব আদালতে তুলে ধরেন।
নানান যুক্তিতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি বাতিলকে দেশের সব রাজনৈতিক সংকটের উৎস বলে মনে করা হয়। এ রকম বাস্তবতায় বেশ কয়েক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছিলো যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছে যে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সেই সংশোধনী বাতিল অথবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানসম্বলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় রিভিউয়ের আবেদন করা হলো বলে মনে করা হচ্ছে।