ঢাকা অফিস: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে কোনো ব্যক্তির সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারির পর যদি নোটিশপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাতে সাড়া না দেন বা হিসাব জমা না দেন তাহলে তার সাজা কি? অনেকের মনেই এ প্রশ্নটি ঘোরপাক খায়। কারণ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি নোটিশ পাওয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রে চেষ্টা করেন এড়িয়ে যাওয়ার। কী আর হবে, ভাবটা যেন এমন। কিন্তু দুদক আইন বলছে, নোটিশ পাওয়ার পর কোনো ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট ফরমে তার সম্পদের হিসাব জমা না দেন, তাকে তিন বছরের সাজা পেতে হবে। এর জন্য ওই ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকবে না।
সাধারণত, কোনো ব্যক্তিকে নোটিশ দেওয়ার পর দুদক তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হিসেবে তার দেয়া তথ্যের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে। এমনকি তার বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে।
কিন্তু সম্পদের হিসাব দাখিল না করা ব্যক্তির ব্যাপারে এসব করতে হয় না। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা সোজা আদালতে গিয়ে ‘নন সাবমিশন’ মামলা করতে পারেন।
২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(১) ধারায় কোনো ব্যক্তিকে নোটিশ দিয়ে থাকে দুদক। এই ধারার বিধান মতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে তার সম্পদের হিসাব দাখিল না করেন, তাহলে তিন বছরের শাস্তির বিধান রয়েছে। অনেকের শাস্তিও হয়েছে এ ধারায়।
তবে এখানে উল্লেখ করার বিষয় হলো, দুদক অনেক ক্ষেত্রেই ‘নন সাবমিশন’ মামলা করেই ওই ব্যক্তির বিষয়ে কার্যক্রম শেষ করে। কিন্তু তাকে নোটিশ জারির আগে বিধি মোতাবেক তার যে অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়ে নোটিশ দেয়া হলো সেই সম্পদের বিষয়ে মামলা খুব কম হয়ে থাকে।
দুদকের আইন ও প্রসিকিউশন শাখার সাবেক মহাপরিচালক মো. মঈদুল ইসলাম এ বিষয়ে ঢাকা টাইমসকে বলেন, যে ব্যক্তিকে নোটিশ দেয়া হলো তিনি হিসাব জমা না দেয়ায় ‘নন সাবমিশন’ মামলার আসামি হলেন। কিন্তু তার দুর্নীতিলব্ধ সম্পদের তো তদন্ত হলো না। বিচার তো পরের কথা। কারণ কমিশন নোটিশ জারির আগে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ রয়েছে মর্মে স্থির বিশ্বাস নিয়ে নোটিশ করেছিল। তাহলে তার সেই অবৈধ সম্পদ গেল কোথায়? সেটার কী হলো তবে?
তিনি বলেন, নোটিশ জারির পর কেউ সম্পদের হিসাব না দিলে শুধু ‘নন সাবমিশন’ মামলাই নয়, তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করতে কোনো বাধা নেই।