যশোর অফিস; যশোরের নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মামলা বানিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে মহাসড়কে চলাচলকারী পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল,ট্রলি, ইজিবাইক, নছিমন ও করিমনের চালকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। চালকদের অভিযোগ, রাস্তায় কাগজপত্র চেকের নামে প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হয় এবং মামলা বা চাঁদার মাধ্যমে অর্থ আদায় করা হচ্ছে।
চালকরা জানান, হাইওয়ে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পুলিশের বিশেষ চুক্তি রয়েছে। তবে যেসব যানবাহন ওই চুক্তির আওতায় পড়ে না, সেগুলো আটক করে মামলা দেওয়া যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
বেনাপোল-যশোর ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেনাপোল কাগজপুকুর বাজার,শার্শার কামারবাড়ি মোড়,নাভারণ বাজার, উলাশীর বাজার, হাড়িখালীর মোড়, জামতলা মবিল ফ্যাক্টরির সামনে এবং বেলতলা বাজারে প্রায় নিয়মিতই পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। এ সময় তারা যানবাহন থামিয়ে চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
শনিবার সকালে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের বাগআঁচড়া (বাগুড়ী) বেলতলা বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পোশাক পরিহিত অবস্থায় হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম মূল সড়কে অবস্থান করছে। ওই সময় তারা ৪টি ইজিবাইক, ৮/১০টি মোটরসাইকেল, ২টি ট্রলি ও ২টি ছোট ট্রাক জব্দ করে এবং কনস্টেবলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করছে।
ট্রাকচালক উজ্জ্বল বলেন, গাড়ির কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও পুলিশ চা-নাস্তার খরচের কথা বলে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মামলা দিয়ে হয়রানি করে। মামলার ভয়েই চালকরা টাকা দিতে বাধ্য হন।
একইভাবে মোটরসাইকেলচালক সবুজ জানান, তার মোটরসাইকেলের লাইসেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট সবই ছিল। তারপরও শুধুমাত্র তিনজন আরোহী থাকায় নাভারণ হাইওয়ে পুলিশ মামলা দিয়েছে। তার দাবি, প্রথমে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল।
অভিযোগ প্রসঙ্গে নাভারণ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকনুজ্জামান বলেন,“হাইওয়ে পুলিশের কারো বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রশ্নের মুখে হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকা
হাইওয়ে পুলিশের নির্ধারিত দায়িত্ব হলো যানজট নিরসন, মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধ ও সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, এ দায়িত্ব পালনের বদলে দিনের অধিকাংশ সময় তারা মামলা বানিজ্য ও চাঁদাবাজিতেই ব্যস্ত থাকেন। এতে সাধারণ চালকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন এবং মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।