যশোর প্রতিনিধি
যশোরে আলোচিত সন্ত্রাসী ইয়াসিন আরাফাত ওরফে হুজুরে ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রুবেল ও রানা নামে দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে খুলনা শিরোমনি থেকে তাদের আটক করা হয়।
তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক রুবেল ও রানা শহরের শংকরপুর এলাকার তোরাব আলীর ছেলে।
যশোর ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরপরই জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান নামেন তারা। এক পর্যায়ে তারা সোর্সের মাধ্যমে খবর পান সন্দেহভাজন খুনি রুবেল ও রানা খুলনার শিরোমনির লিন্ডা প্রাইভেট হাসপাতাল অবস্থান করছে। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
যশোরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আলোচিত হুজুরে ইয়াসিনকে হত্যা
এদিকে, হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ রুবেল ও রানাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তাদের হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে। হাসপাতালে রেজিস্ট্রি খাতায় তারা গণপিটুনিতে আহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এব্যাপারে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার রাতে শহরের বেজপাড়ার চোপদারপাড়া এলাকায় ব্রাদার্স ক্লাবের মধ্যে ঢুকে সন্ত্রাসীরা ইয়াসিন আরাফাত ওরফে হুজুরে ইয়াসিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে।
নিহতের স্ত্রী শাহানা আক্তার নিশা দাবি করেছেন, মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ায় ইয়াসিনকে স্বর্ণকার রানা, রুবেল, মাঠপাড়ার সুমন, ধনীসহ সন্ত্রাসীরা তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে।
স্থানীয় ও পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইয়াসিনের নেতৃত্বে এলাকায় নানা অপরাধ হতো। তার নামে হত্যাসহ প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে। এক সময় নাজির শংকরপুর মাঠপাড়ার সুমন এক সাথে থাকলেও বেশি কিছু দিন তাদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এজন্য সুমন পৃথক গ্রুপ তৈরি করে। এই নিয়ে অপরাধ চক্রের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করেই দুই পক্ষের মধ্যে এই বিরোধ। এরই জের ধরে সুমনের ক্যাডার রানা, রুবেল, ফারাজীসহ সন্ত্রাসীরা তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে।
কোতয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) তাসকিন আলম সাংবাদিকদের জানান, প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন মারা গেছে। তার নামে কোতোয়ালী থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ এক ডজন মামলা রয়েছে বলে জেনেছি। তার মামলার সংখ্যা খুঁজে দেখা হচ্ছে। একই সাথে ইয়াসিন হত্যার সাথে জড়িতদের আটকে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
তবে নিহত ইয়াসিনের শ্বশুর শামীম আহমেদ মানুয়া জানান, ইয়াসিন বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিলেন। কোনো অপরাধের সাথে থাকতেন না।
নিহতের পিতা মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনার সময় তিনি মসজিদে ছিলেন। ছেলে ইয়াসিনকে কুপিয়ে জখমের খবর শুনে হাসপাতালে আসেন। এরপর জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক সালাউদ্দিন বাবু জানান, রাত ৮ টা ২০ মিনিটে ইয়াসিনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তার ঘাড়ে ও মাথার পিছন পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।