অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী রুখতে কঠোর আ:লীগ

ঢাকা অফিস: আওয়ামী লীগ দলে অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড, স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী এবং নানা অপকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের রুখতে আরো কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন সংক্রান্ত মুলতবি বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। কোনোভাবেই যেন অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকতে না পারে সেজন্য তিনি লাস্ট ওয়ার্নিং দিয়েছেন তৃণমূলের কমিটিগুলোকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের এই বৈঠকে বলা হয়েছে এখন থেকে তৃণমূল থেকে যদি কোনো বিতর্কিত ব্যক্তির নাম পাঠানো হয় এবং পরবর্তীতে যদি প্রমাণিত হয় যে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে সেই অভিযোগ সত্যি তাহলে যারা তার নাম পাঠিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে ওই কমিটি বাতিল করে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।

এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটছে। বিভিন্ন স্থানে মনোনয়ন পাওয়ার পর থলের বিড়াল বেরিয়ে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, কেউ যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান, কেউ বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি করতো, আবার কেউ কেউ নানারকম সন্ত্রাসী এবং অপতৎপরতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এ ধরনের বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুলুস্থুল, তখন আওয়ামী লীগের স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ড বেশকিছু বিতর্কিত ব্যক্তিদের মনোনয়ন বাতিল করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করেছিলো এরকম অভিযোগে অভিযুক্ত দুই জনকে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে। এটি আওয়ামী লীগকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছিলো সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। আর এ কারণেই এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইতোমধ্যে তৃণমূলকে বলেছেন, তারা যেন কোনো স্বার্থের বিনিময়ে বিতর্কিত এবং অনুপ্রবেশকারীদের নাম মনোনয়নের জন্য না পাঠান। কিন্তু তারপরও এটি বন্ধ হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের বৃহস্পতিবারের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এটাও আলোচনা হয়েছে, সত্য অভিযোগের চেয়ে গুজব এবং অপপ্রচারের অভিযোগ বেশি। একে অন্যকে ঘায়েল করার জন্য পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিচ্ছে, অনেক অভিযোগের সত্যতা নেই। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে যেকোনো মনোনয়ন লাভকারীর বিষয়ে অভিযোগ দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই সমস্ত অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, ১০০ ভাগের শতকরা ১ ভাগের বিরুদ্ধেও সত্য অভিযোগ হয়নি। তবে যেখানে যেখানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে সেখানে সেখানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি একজন অনুপ্রবেশকারীও এবং একজন বিতর্কিত ব্যক্তিও যেন মনোনয়ন না পান সেটি নিশ্চিত করার জন্য বলেছেন। আর এখানে যারা তৃণমূল থেকে নাম পাঠাচ্ছেন তাদেরকে সতর্ক, দায়িত্বশীল এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ ব্যাপারে দলকে আরো কঠোর হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশ দিয়েছেন। যেখানে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে সেখানে ওই কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা তাদের নাম প্রস্তাব করেছেন তাদেরকে চিহ্নিত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির এ ধরণের কঠোর অবস্থানের ফলে আওয়ামী লীগ মনে করছে ভবিষ্যতে এরকম বিতর্কিত ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল সতর্ক হবে।