ধর্ষক ছেলেকে বাঁচাতে মায়ের সংবাদ সম্মেলন, প্রতিবাদ জানাতে ধর্ষিতার সংবাদ সম্মেলন

Share

যশোর প্রতিনিধি: ব্লাকমেইল করে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে, বিবাহের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করলো নাহিদ হাসান বাঁধন মামলা থেকে বাঁচাতে মা-নাছিমা খানম (বিউটি) সহ পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে ধর্ষিতা নারীর মানহানি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চলতি মাসের ১৩ই মে দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোরে, তারই তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন নাজনীন নাহার (তিশা) নামে ধষর্ণের শিকার ওই নারী। তিন শহরের বাড়ান্দী পাড়া এলাকার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন,নাজনীন নাহার (তিষা) আমি যখন ১০ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করি তখন আমার বয়স ছিল (১৬) বছর ঠিক ওই সময় নাহিদ হাসান বাঁধন আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতো। কোনো কোনো দিন প্রেমের প্রস্তাব দিতো এবং আমার স্কুলের যাতায়াতের পথে আমাকে উৎত্যাক্ত করত। এক পযার্য়ে যখন সে দেখলো আমি তার কথায় কর্ণপাত না করে চলে যেতাম। তখন একদিন সে আমার বান্ধবীর সাথে কথা বলে আমার বান্ধবীকে দিয়ে আমাকে তার সাথে কথা বলার জন্য রাজি করাই।

এর পর ১০ বা ১২ দিনপরে আমাদের দুজনকে একটি স্ন্যাকস এ খাওয়ানোর জন্য খুব জোর করে। আমরা তার সাথে সেখানে যাই। সেই স্নাক্স এ বসে খাওয়া ও কথাবলার সময় হঠাত সে আমার পাশে বসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে একটা কিস করে। আমি তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ওখান থেকে চলে আসি। আমি আসারপরে সে আমার বান্ধবীর কাছথেকে আমার ফোন নাম্বারটা নেয় এবং ওইদিন রাত দশটার পর আমাকে সে ফোন করে বিভিন্ন ধরনের কথা বলে আমার মন যোগানোর চেষ্টা করে কিন্তূ আমি যখন তার সাথে বেশি কথা না বলে ফোনটা কেটে দিই তখন সে আমার ডযধঃংঅঢ়ঢ় নাম্বারে আমাকে সে কিস করছে সে সেই ফটো পাঠায়। আমি সেই ফটো দেখে অনেক ঘাবড়ায় যায় এবং তাকে ওই সময় আমি ফোন করে জিজ্ঞাসা করি। এই বিষয়টি নিয়ে সে আমাকে বলে কালকে তার সাথে দেখা করতে তা না হলে ঐ ফটো ফেইসবুকে পোস্ট করে দেবে এই বলে লাইনটা কেটে দেয়।

তার পরেরদিন সে আমাকে জেস গার্ডেন পার্কের সামনে দেখা করতে বলে আমি সেখানে গেলে পাশেই তার বাসা বলে আমাকে হুমকি দিয়ে নিয়ে যায়। তখন ওই বাড়িতে আর কেউ ছিলোনা। এরপর সেখানে বাঁধন প্রথম বার আমাকে জোর করেই ওখানে ধর্ষণ করে এবং গোপনে ভিডিও ধারণ করে আমাকে ব্লক মেইল করে।

এরপর বিভিন্ন দিন বিভিন্ন ভাবে আমাকে ফুসলিয়ে আমাকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে বাহাদুরপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ঘরভাড়া নিয়ে তিন বছর ধরে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। একটা সময় আমিও তার প্রেমের ফাঁদে পড়ে যায়। আমার সাথে সম্পর্কের ৬ থেকে ৭ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর তখন আমি লোক মারফতে জানতে পারি যে সে বিবাহিত এবং ১টি নয় এই পর্যন্ত সে ৪টি বিবাহ করেছেন। এগুলো জানার পর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে সে আমার কাছে তার একাধিক বিবাহের কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও ফোনে কথা কাটাকাটি একপর্যায়ে স্বীকার করেন যে সে বিবাহিত কিন্তু জোর করে তাকে তার মা-নাসিমা খানম বিউটি এবং বোনাই-বাদল মাহমুদ (খালধার রোড আলিয়া মাদ্রাসার পাশে) মিলে বিবাহ দিয়েছে এবং তার জন্য সে একা থাকে। ওই মুহূর্তে আমার তার কাছ থেকে পিছিয়ে আসার কোনরকম সম্ভব ছিল না।

তখন আমি আমাদের সম্পর্কের বিষয় আমার পরিবারকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু বাধন আমাকে জানাতে নিষেধ করে এবং বলে আমি তোমাকে বিয়ে করবোই, তুমি শুধু আমাকে একটু সময় দাও। বলে ৩ বছর একইভাবে ঘরভাড়া রাখে, আমি যখনই বিয়ের কথা বলি সে তখনই আমাকে বিভিন্ন সময়ের কথা বলে ঘোরাতে থাকে। আমি কলেজে ভর্তি হই এবং এইচএসসি পাশ করি। হঠাৎ করে গত মার্চ মাসের রোজার ভিতরে বাধন আমাকে বলে যে আমার একলক্ষ টাকার খুব দরকার কোথাও থেকে ধার করে হলেও আমাকে টাকাটা এনে দাও ঈদের পরে ফেরত দিয়ে দেবো। তখন কোনো দিকে ম্যানেজ করতে না পেরে আমার আব্বুর কাছে টাকাটা চাই এবং সম্পর্কের কথাটা আমার আব্বুকে জানাই কিন্তু তখনকার জন্যে তার আগের ৪টা বিবাহের কথা আব্বুকে না বলে চেপে যাই আমি।

তখন আমার আব্বু বাধনকে আমাদের বাসায় ডেকে আমাদের সম্পর্কের কথা বার্তার শেষে আব্বু নগদ ৫৬ হাজার টাকা বাধনের হাতে দেয়। আমাদের সম্পর্কের বিষয় জানায় আমার পরিবারের থেকে তার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে যাওয়ার পরে যখন জানতে পারে যে, আগে তার আরও ৪টা বিবাহর কথা। জানার পরে আমাকে অনেক মারধর করে আমার আব্বু বাইরে কোথাও যেতে দেইনা এমন কি কলেজে যেতে দেয় না। তখন আমার আমার পরিবার তার গার্জিয়ানদের কাছে বিষয় টা জানাই এবং এতে দুই পরিবারের মধ্যে অনেক ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

রোজার ভিতরে ৫৬ হাজার টাকা দেওয়ার ৪/৫ দিনের ভিতর। পরবর্তীতে তাদের এলাকার কিছু সম্মানীয় ব্যক্তির উপস্থিতিতে শালিসি সভা বসে এবং সেখানে তারা সব কিছু জানা ও শোনার পর তার পরিবারকে বিবাহ করানোর সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু বাধনের মা-নাসিমা খানম ও বোন জামাই-বাদল মাহমুদ (খালধার রোড আলিয়া মাদ্রাসার পাশে) সহ তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুক হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে আমার পরিবারের নিকট। আমার পরিবার যৌতুকের টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করে। তখন তারা বিবাহ করতে অস্বীকৃতি জানাই। তারপর আমি ২ মাস বিবাহের দাবী নিয়ে তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকি। এর মধ্যে তারা যশোর কোতয়ালী থানায় বাধন কে আমি ব্লাক মেইল করছি বা টাকা আত্মসাৎ করছি এমন অভিযোগ দাখিল করে। কোতয়ালী থানার উক্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে দেখেন অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এরপর আমি বিবাহের দাবী নিয়ে চলতি মাসের ২ই মে তারিখে নিজে তাদের বাড়ীতে যায়। সেখানে যাওয়া মাত্রই আমাকে বাধনের মা-নাসিমা খানম, স্ত্রী-লাবনী খাতুন, বোন জামাই বাদল মাহমুদ আমাকে মারপিট করে। এর পর আমি স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় যশোর ২৫০ শর্য্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করি।

ওই দিন দুপুরে তারা আমার বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালী থানায় আবারও একটি মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করে। উক্ত তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে দেখেন ঘটনাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। যার কারণে তিনি আর তদন্ত কার্যক্রম করেন নাই। এরপর আমি বহুবার বাধনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি এবং বিবাহের দাবী নিয়ে তার নিকট লোক পাঠাই। উক্ত ঘটনার কোন সুরাহ না পাওয়ায় আমি যশোর কোতয়ালী থানাই চলতি মাসের ১৩ই মে বাধন কে আসামী করে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষন মামলা দায়ের করি। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামী বাধনকে গ্রেফতার করে। তারপর তার পরিবারের লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যদিয়ে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে গত ১৩ই মে তারিখে তার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়ের আমি যে সংবাদটি আপনাদের সামনে পাঠ করলাম। তদন্ত করে দেখার অনুরোধ করছি যে আমি কোন মিথ্যা সংবাদ পাঠ করলাম কিনা। সাংবাদিক ভাইয়েরা আমি একজন অবিবাহিত নারী আমার বিরুদ্ধে চলতি মাসে ১৩ই মে তার পরিবার যে সংবাদ সম্মেলন করে আমার মান সম্মান হানী করে। বাধনের সহিত আমার বিবাহ যদি না হয় তাহলে আমার ভবিষ্যত কি? পরিশেষে আপনারা সকলে সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন এই কামনায় আমার সংবাদ সম্মেলন শেষ করলাম।

যশোর শহরের খালধার রোড আলিয়া মাদ্রাসার পাশের বাসিন্দা, বাধনের বোনাই-বাদল মাহমুদের সাথে দেখা হলে সে আমাকে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে এবং মামলা তোলার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। মামলা না তুললে আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে।

Read more