যশোর প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা শ্যামনগরের সাবেক এমপি এসএম জগলুল হায়দার, যশোরের সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে দায়ের করা পিটিশন কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড হয়েছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা হাটবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান মিয়াকে অপহরণ ও সাড়ে ১৩ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে।
শ্যামনগরের চন্ডিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী হাসান মিয়া যশোরের আদালতে পিটিশন দাখিল করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া অভিযোগটি এজাহার হিসেবে কোতয়ালি থানার ওসিকে আদেশ দিলে শুক্রবার তা নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড হয় থানায়।
মামলার অপর আসমিরা হলেন শ্যামনগরের নকিপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল হায়দার বাবু, যশোর ডিবির সাবেক এসআই আবুল খায়ের মোল্লা, এসআই শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল মশফিকুজ্জামান, কনস্টেবল জহুরুল ইসলাম, কনস্টেবল মফিকুল ইসলাম ও বাঘারপাড়ার খাজুরা পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এএসআই মাসুদুর রহমান।
মামলার অভিযোগে হাসান মিয়া উল্লেখ করেছেন, তিনি শ্যামনগর উপজেলা বাজারে মেশিনারিজ মালামালের ব্যবসা করতেন। ২০১১ সালে শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রার্থী হন তিনি। এ নির্বাচনে এসএম জগলুল হায়দারও প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে জগলুল হায়দার ও হাসান মিয়া অপর প্রার্থী থেকে সামান্য ভোটে পরাজিত হন। জগলুল হায়দার নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার কারণ হিসেবে হাসান মিয়াকে দোষ দিয়ে তার ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৪ আসন থেকে জগলুল হায়দার আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে বিনা ভোটে নির্বাচিত হন। এরপর জগলুল হায়দার ও তার লোকজন হাসান মিয়ার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দেয়ায় হাসান মিয়ার বিরুদ্ধে একরে পর এক গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করতে থাকেন। নিরুপায় হাসান মিয়া ব্যবসা বন্ধ করে খুলনা হরিণটানা জিরো পয়েন্টে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন।
২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসান মিয়াকে যশোরের পুলিশ ডুমুরিয়া বাজারের চৌরঙ্গী মোড় থেকে ধরে চোখ বেঁধে যশোর ডিবি অফিসে এনে রাখে। এরপর হাসান মিয়াকে মারপিট করে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তাকে ক্রসফায়ারে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরমধ্যে হাসান মিয়ার স্বজনেরা জানতে পারেন যশোর ডিবি অফিসে তিনি আটক আছেন। ভাই রেজাউল করিম ও আনিসুর রহমান যশোর ডিবি অফিসে এসে আসামিদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ছেড়ে দিতে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ১৭ এপ্রিল রাতে ডিবি অফিসে এসে ভাই রেজাউল করিম ও আনিসুর এএসআই মাসুদুর রহমানের কাছে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দেন। পরদিন হাসান মিয়াকে একটি সাজানো অস্ত্র মামলা দিয়ে আদালতে চালান দেন আসামিরা। এরপর হাসান মিয়া কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় আরও কয়েকটি মামলায় আটক দেখানো হয়। পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পান হাসান মিয়া।
ঘটনার সময় পরিবেশ অনুকুলে না থাকায় তিনি মামলা করতে পারেননি উল্লেখ করে বলেছেন, বর্তমানে পরিবশে স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি আদালতে মামলা করলে পুলিশ আদালতের নির্দেশে থানায় নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করে।