যশোর অফিস: মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও দেখে উত্তেজিত হয়ে পাঁচ বছরের শিশু তাসনিয়াকে যৌন নির্যাতন ও পরে নৃশংসভাবে হত্যা করে করেছিলো রিতু নামের এক কিশোরী। শিশুকে হত্যা করে মরদেহ লেপের ভেতরে পেচিয়ে রেখে দিয়েছিলেন নিজ ঘরে। একপর্যায় রাতের আধারে বাড়ির পাশের পুকুরে ওই শিশুর মরদেহ ফেলে দেয়া হয়। সাজানো হয় পানিতে ডুবে মৃত্যুর নাটক। অবিশ্বাস্য মনে হলেও নৃৃৃশংস এ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে তাসনিয়ার পাশের বাড়িরই বাসিন্দা ইশিতা আক্তার রিতু। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০ জুলাই যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে।
এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত রিতু ও তার বাবা তহিদুর রহমান এবং মা নিরু বেগমকে আটক করেছে পিবিআই যশোরের সদস্যরা। ঘটনার দুই মাসের মাথায় ক্লুলেস এ হত্যা কান্ডের রহস্যও উদঘাটন করেছে তারা।
শনিবার রাতে আটকের পর রোববার ঘটনাস্থল নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় রিতু ও তার বাবাকে। এসময় তারা নিজ মুখেই সব স্বীকার করেন। কিভাবে হত্যা করা হয় তারও বর্ণনা দেন তারা।নিহত তাসনিয়ার বাবা মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাসনিয়ার বাড়িতে সবই আছে শুধু সে নেই। এলাকাবাসী। সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, মরদেহ পানিতে পাওয়ার পর তাদের ধারনাই ছিলো ডুবে মারা গেছে তাসনিয়া। তাই তারা মরদেহের ময়নাতদন্ত না করার জন্য পুলিশকে বারবার অনুরোধ জানান। কিন্তু তাসনিয়ার শরীরের কয়েকটি ক্ষত চিহ্ন দেখে সন্দেহ হয় বাঘারপাড়া থানার ওসি রোকিবুজ্জামানের। একপর্যায় ময়না তদন্তের পর বেরিয়ে আসে আঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে তাসনিয়াকে। সেসময় থানা পুলিশও রিতু ও তার পরিবারকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তারা মুখ খোলেনি। ময়নাতদন্তে আরও উঠে আসে হত্যার আগে তাসনিয়াকে যৌননিপীড়ন করা হয়েছিলো। এতথ্যে থানা পুলিশের তদন্ত ঘুরে যায় অন্যদিকে। তারা ধর্ষকের সন্ধানে মাঠে নামে। এঘটনায় নিয়মিত মামলা করেন তাসনিয়ার পিতা রজিবুল ইসলাম। অন্যদিকে, পিবিআই যশোরের সদস্যরা পড়ে থাকে রিতুকে নিয়েই। ঘটনার পরপরই তড়িঘরি করে রিতুর বিয়ে দেয়া ও তার একেক সময় একেক রকম তথ্য দেয়ায় সন্দেহ প্রকট হয়। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক ঘটনা।
এ বিষয়ে পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমীন বলেন, এঘটনায় সেপ্টেম্বরে মামলা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। এরপর এসআই স্নেহাশীষের নেতৃত্বে একটি টিম দফায় দফায় ওই এলাকায় যায় । প্রথমে রিতুর বাবা ঘটনাটি স্বীকার করেন। এরপর সব বেরিয়ে আসে। তিনি আরও বলেন, রিতুর বিকৃত যৌন লালসার শিকার হয়েছেন তাসনিয়া। রিতু পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ছিলো। ঘটনার সময় শিশুটি চিৎকার দেয়। পরে ওই শিশুকে শাবল দিয়ে আঘাত করে। পরে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।