বরিশাল প্রতিনিধি: ভারতে রপ্তানি শুরু হলেও বরিশালে দেখা দিয়েছে ইলিশ সংকট। এতে বিপাকে পড়েছেন রপ্তানিকারকেরা। প্রতিদিন গড়ে ১৪ টন ইলিশ রপ্তানির কথা থাকলেও চার দিনে মাত্র ১১ টন ইলিশ গেছে ভারতে। এই অবস্থায় এবারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়েই দেখা দিয়েছে সংশয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে বরিশালের ৫টি প্রতিষ্ঠান। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ দিনে এখান থেকে ২৫০ টন মাছ রপ্তানির কথা রয়েছে।
তবে ইলিশ সংকটে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রপ্তানি সম্পন্ন করা নিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। এরইমধ্যে নগরীর পোর্টরোড, বেলতলা ও চন্দ্রমোহন মোকামে সরবরাহ কমের অজুহাতে বেড়েছে ইলিশের দাম।
বরিশাল ইলিশ আড়ত মালিক সমিতির আড়তদার ইয়ার আলী সিকদার বলেন, ‘সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম আর স্থানীয় বাজারে দামের মধ্যে অনেক পার্থক্য। এতে রপ্তানিকারকেরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। পাশাপাশি বাজারে মাছও কম।
রপ্তানিকারকেরা বলছেন, স্থানীয় বাজারের চেয়ে কম দামে ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে। প্রতি কেজি ১০ ডলার বা প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা দামে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হলেও আকারভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বেশি দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বাধ্য হয়ে লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে রপ্তানি করার কথা জানিয়েছেন তারা।
রপ্তানিকারক মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘মাছের সংখ্যা কম। এটা তো আল্লাহ প্রদত্ত জিনিস। মাছ পেলে আমরা মাছ দিতে পারব। তবে এখন যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে।
আরেক রপ্তানিকারক মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘মাছের দাম বেশি হলেও লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে আমাদের রপ্তানি করতেই হচ্ছে। বেশি দাম-কম দাম মিলিয়ে একটি গড় দামের কারণে টিকে আছি আমরা।’
মৎস্য বিভাগ বলছে, ইলিশ সংকটের কারণে গত তিন বছর বরিশাল থেকে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এবারও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে আছে সংশয়।
ইলিশ কর্মকর্তা ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, গত তিন বছর থেকে এই সময়টায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ইলিশ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। এ বছরেও বরিশালে ইলিশ আহরণের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে।
গত বছর বরিশাল থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ হয়েছে। এবার তার চেয়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন বেশি আহরণের আশা মৎস্য বিভাগের।