ঢাকা টাওয়ার ডেক্স: গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কাজে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন যাতে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে হতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করতে ‘পরিস্থিতি যাই হোক না কেন’ তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন।
সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন। সেনাপ্রধানের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিএনপি-জামায়াত ভিন্ন ভিন্নভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই হওয়া উচিত। নির্বাচন যত দ্রুত হবে ততই জাতির জন্য মঙ্গল হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ জরুরি। সেজন্যই নির্বাচনের দরকার।
অন্যদিকে সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে দলের সভায় পর্যালোচনা করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।
বাংলানিউজকে তিনি বলেছেন, সেনাপ্রধান সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে তার বক্তব্য দিয়েছেন। নির্বাচন বিষয়ে আমাদের আমির দলের অবস্থান আগেই তুলে ধরেছেন। তিনি জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আপাতত এটুকুই এ বিষয়ে দলের বক্তব্য।
সোমবার রাজধানীতে নিজ কার্যালয়ে বসে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করার একটি রূপরেখা দেন তিনি।
ড. ইউনূস প্রসঙ্গে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমি তার পাশে থাকব। যা-ই হোক না কেন। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।
সেনাপ্রধান বলেন, সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটা উচিত। তবে সে জন্য তিনি ধৈর্য ধরার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব যে, এই সময়সীমার মধ্যেই আমাদের একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে তিনি প্রতি সপ্তাহে সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। অস্থির সময়ের পর দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তারপর থেকে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি দ্রুততর সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে আসছে।
নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, পুলিশ বাহিনীসহ ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কমিশনের ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা রয়েছে।