যশোর প্রতিনিধি: জালজালিয়াতির মাধ্যমে কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বিয়ের কথা বলে যশোরে এক কলেজ ছাত্রীর সাথে স্বামী-স্ত্রী রূপে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার যশোর সরকারী মহিলা কলেজের ওই ছাত্রী তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করেছেন। বিচারক মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশ যশোর জোনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বামুন্দি-বালিয়াকান্দি গ্রামের নায়েব আলী, তার দুই ছেলে আব্দুর রহিম ও রাজিব।
বাদী মামলায় জানিয়েছেন, বাদী যশোর সরকারী মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে লেখাপড়া করেন। কলেজে যাতায়াতের পথে দেখা এবং পরিচয় হয় আসামি আব্দুর রহিমের সাথে। এরপর দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই মধ্যে আসামি আব্দুর রহিম বাদীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে আগ্রহী হন। কিন্তু বিয়ে ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক করতে নারাজ ওই কলেজ ছাত্রী। ফলে আব্দুর রহিম তাকে বিয়ে করতে রাজি হন। তবে শর্ত থাকে যে এই বিয়ের কথা মেয়েটি কাউকে জানাতে পারবেন না।
পরে সময় সুযোগ বুঝে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাবেন বলে আব্দুর রহিম জানিয়েছেন। এরপরে ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই আব্দুর রহিম মেয়েটিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পুড়াদহ গ্রামে এক আত্মীয় বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে একজন কাজী ডেকে দেড়শ’ টাকার সাদা স্ট্যাম্পসহ নীল কাগজে মেয়েটির স্বাক্ষর করিয়ে নেয় আব্দুর রহিম। এরপরে বলে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন থেকে আমরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শারীরিক সম্পর্ক করতে আর বাধা নেই। পাশাপাশি মেয়েটিকে নিয়ে আব্দুর রহিম যশোরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
কিন্তু আব্দুর রহিম একটি চাকরি করেন। ফলে মাঝেমধ্যে তিনি বাসায় থাকেননা। সর্বশেষ গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাসায় আসেন। ওইদিন রাতে মেয়েটিকে আব্দুর রহিমের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এই নিয়ে উত্তেজিত হয়ে আব্দুর রহিম সেখার থেকে পরদিন তার জিরে বাড়িতে চলে যান। পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর বেলঅ ১১টার দিকে মেয়েটি তার পিতাকে নিয়ে আব্দুর রহিমের গ্রামের বাড়িতে যান। এসময় আব্দুর রহিম মেয়েটিকে চিনেননা এবং তাকে কখনো বিয়ে করেননি বলেও জানান। পাশাপাশি আব্দুর রহিম, তার মা ও বাবা সকলেই মেয়েটিকে মারপিট শুরু করেন। ২০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে যশোর শহরের ধর্মতলা নুরুল আলমের বাড়িতে ডেকে আনা হয় আব্দুর রহিম ও তার মা-বাবাকে। সেখানে উপস্থিত লোকজনের সামনে মেয়েটিকে নিয়ে সংসার করার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ওই সময়েও তারা বিয়ের কথা এবং স্ট্যাম্প ও নীল কাগজে স্বাক্ষরের কথা অস্বীকার করে চলে যান।