রংপুর প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার মামলায় দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন— বরখাস্ত হওয়া সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। এ ঘটনায় গত ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাজহাট আমলী আদালতে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে পুলিশ কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষকসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এর আগে পরস্পর যোগসাজশে বেআইনি জনতাবদ্ধে সাধারণ ও মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করে গুরুতর জখম, চুরি, ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন, অগ্নিসংযোগ ও নিরীহ ছাত্রকে হত্যার অপরাধে তাজহাট থানায় একটি মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়।
পুলিশের করা মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞতা পরিচয়ে উচ্ছৃঙ্খল দুই থেকে তিন হাজার আন্দোলনকারী ছাত্র নামধারী দুর্বৃত্তসহ বিএনপি, জামায়াত-শিবির সমর্থিত নেতাকর্মীকে। মামলার বিবরণের মাঝে উল্লেখ করা হয় ‘বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখা যায়। তখন সহপাঠীরা তাকে ধরাধরি করে জরুরি চিকিৎসার জন্য বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত ছাত্রের নাম আবু সাঈদ (২৩)।
মামলার বাদী রমজান আলী বলেন, ‘আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যই পরিবারের পক্ষে মামলা করেছি। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তসহ অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে ন্যায় বিচার করা হোক।
রংপুর পিবিআইর পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, ওই দুই পুলিশ সদস্য আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি। তারা রংপুর পুলিশ লাইনে নজরদারিতে ছিলেন। এর আগে গত ৩ আগস্ট এই দুই পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আবু সাঈদ হত্যায় করা দুই মামলারই তদন্ত পিবিআই করছে বলেও জানান তিনি।