যশোর প্রতিনিধি
যশোর শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানিতে ডুবে গেছে। পাড়া-মহল্লার রাস্তাঘাট, বাসাবাড়িতেও পানিতে একাকার হয়ে গেছে। বিশেষ করে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের অবস্থা বেহাল। বকচর মোড় থেকে নীলগঞ্জ সড়কটি সবচেয়ে বেহাল। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষরা দুর্ভোগ সঙ্গী করেই হেঁটে পানিতে ভিজে গন্তব্যে যাচ্ছে। রাস্তায় চলাচলকারী যানবহনগুলো মানুষের দুর্ভোগের প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। রাস্তায় বড় বড় খানা খন্দগুলোয় জমে থাকা পানিতে মানুষের ভিজিয়ে টাপুরটুপুর করে দিচ্ছে। বিশেষ করে নামাজির মানুষেরা পড়েছে সবচেয়ে বিপদে।
আজ রোববার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর এলাকার মূল রাস্তাসহ পাড়া-মহল্লার রাস্তায় কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও রাস্তার উপর পানির স্্েরাত চলছে। পানিতে ময়লা-আবর্জনা ভাসছে। ছড়াচ্ছে উৎকট দুর্গন্ধ। রিকশা, ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচল করলেও তা ছিল সীমিত।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই যশোর পৌর এলাকা পানি থৈ থৈ করে। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। নীলগঞ্জের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, বিগত পৌর মেয়র বকচর মোড় থেকে নীলগঞ্জ সড়কটি একবার রাস্তাটি সংস্কার করেছিলো। এরপর আর কেউ এই সড়কটি দিকে তাকাননি। ফলে কেউ এই সড়কটি সড়স্কার করতে এগিয়ে আসেনি।
ওই এলাকার বাসিন্দা রফিক বলেন, পানিতে ভিজে হেঁটে হেঁটেই যাতায়াত করতে হয় তাদের। হাঁটতে গিয়ে অসাবধানতাবশত অনেকে পা পিছলে দুর্ঘটনায়ও পড়ছেন। তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বর্ষা হলে কেউই বাসার বাইরে বের হয় না। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ আছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান বাবলুর বাড়ি নাজির শংকরপুর এলাকার মধ্যে পড়েছে। তিনি কখনো এই এলাকায় আসেন না। মানুষের কোন খোঁজ খবর রাখেন না। একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বকচর মোড় থেকে নীলগঞ্জ। এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শত যানবহন চলাচল করে। লাখ লাখ মানুষ যাতাযাত করে থাকে। এত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ার ফলেও এই সড়কটির দিকে কর্তৃপক্ষ কোন খবর রাখেন না।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান বাবলুর মোবাইলে বেশ কয়েক বার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
খড়কি এলাকার শাহ আবদুল করিম সড়কে দেখা গেছে, এম এম কলেজের দক্ষিণ গেট পাশে খড়কি মোড়ে হাঁটুপানি। জুতা হাতে নিয়ে মানুষ ওই অংশ পারাপার হচ্ছে। পানি জমার কারণে সড়কের বিটুমিনের আস্তরণ উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। একই দৃশ্য শহরের কারবালা, স্টেডিয়াম পাড়া, সার্কিট হাউস পাড়া, রায় পাড়া, শংকরপুর, ঘোপ কবরস্থান পাড়া, বেজপাড়া, তালতলা, নলডাঙ্গা রোড এলাকা, টিবি ক্লিনিক পাড়া, আশ্রম রোড এলাকা, বরফ কলের মোড়, লোন অফিস পাড়া, বড় বাজার এলাকার আবাসিক এলাকা, ষষ্ঠীতলা, এম এম কলেজ রোড, ফায়ার সার্ভিস অফিস, জেলা শিক্ষা অফিসের ভেতরে পানিতে একাকার হয়ে গেছে।
স্টেডিয়াম পাড়ার বাসিন্দা আলমাস হোসেন বলেন, এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। স্টেডিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হলেও অবহেলিত রয়েছে এটি। আব্দুর রাজ্জাক কলেজের পিছনে সড়কটি আজ পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। রাস্তাটি কলেজের পিছন দিক দিয়ে বের হলেও আর কোন কাজ হয়নি। রাস্তাটিও নিচু। নালা অপরিষ্কার থাকে।
যশোর বিমান বন্দর আবহাওয়া বিভাগ থেকে মি. মামুন জানান, ২৪ ঘণ্টায় যশোরে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এখন বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
জানতে যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, টেন্ডার হয়ে গেছে। কাজ শুরু হবে। আমি ঢাকায় রয়েছি।