ঢাকা টাওয়ার ডেস্ক :
২০২৫-২০২৬ চলমান অর্থবছরে সরকারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬৩.৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি কিংবা ৬ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন (বাণিজ্য সচিব) মাহবুবুর রহমান, গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায়।
বানিজ্য সচিব বলে, সদ্য বিদায় নেওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৭.৫০ বিলিয়ন কিংবা ৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, সে হিসাবে এবার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে ৬ বিলিয়ন ডলার বা ৬০০ কোটি টাকা।
সাম্প্রতিক অর্থবছরের রপ্তানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতি ধারা, পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণ এবং বহুমুখী করণ, বিশ্ববাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, ভূরাজনৈতিক প্রভাব, দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মধ্যপ্রাচ্য সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, অংশীজনদের মতামত, বিগত অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা এবং লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জনের হার ও পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে।
লক্ষ্যমাত্রা পণ্য খাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রায় ১৩.৪০% শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করে ৫৫.০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে, আর সেবা খাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রায় ১৮.৬৭% শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করে ৮.৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থাৎ ৬৩.৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই ক্ষেত্রে ২০২০-২১ অর্থবছরকে ভিত্তি বছর ধরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কম্পাউন্ড বার্ষিক বৃদ্ধির হার পণ্য খাতে হয়েছে ২৪.৫৮% শতাংশ এবং সেবা খাতে হয়েছে ৮.৩৮% শতাংশ।
তিনি আরও বলে, তৈরি পোশাক খাতের (ওভেন) রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ১৪.৩১% শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ২০৭৯০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে, তৈরি পোশাক খাতের (নিট) রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ১২.০১% শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ২৩৭০০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
হোম-টেক্সটাইল খাতের রপ্তানির বিশ্ববাজার আকৃতি, প্রবৃদ্ধি ও আমাদের সক্ষমতার প্রেক্ষাপটের আলোকে প্রবৃদ্ধি ১৭.০৩% শতাংশ ধরে ১০২০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত লেদার ও লেদার গুডসের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৯.১৬% শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ১২৫০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্ত বিশ্ব বাজারে পরিস্থিতি, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনাপূর্বক ৩০% শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে এ খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের বিষয়ে এ খাতের প্রতিনিধি প্রস্তাব করেন।
এ ছাড়া হিমায়িত ও জীবন্ত মাছের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ২২.০৬ প্রবৃদ্ধি ধরে ৫৩৯ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে, এ খাতের নীতিগত সহায়তা, ভেনামি চিংড়ির হ্যাচারির লাইসেন্স প্রদান ও কোয়ারেন্টিন সুবিধা বৃদ্ধি করার বিষয়ে সরকারের যথাযথ সহায়তা ও সহযোগিতা পেলে প্রস্তাবিত হারের চেয়েও বেশি রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করার বিষয়ে এই খাতের প্রতিনিধি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পাট ও পাট পণ্যের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার ৯.৭৩% শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ৯০০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে, পণ্যের গুণগত মান যাচাই করার জন্য ল্যাব টেস্টিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে এই খাতে একটি টেকসই পণ্য রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কৃষি পণ্যের লক্ষ্যমাত্রার ২২.৪৩% শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ১২১০.৪০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে, কার্গো বিমান, বিমানবন্দরে কুলিং সিস্টেম ও ইডিএস মেশিনের বিষয়াদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বারোপ করে অবকাঠামো উন্নয়ন করা সম্ভব হলে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন।
√ ঢাকা টাওয়ার ২৪ নিউজ •