বিশেষ প্রতিনিধি
যশোর শহরের পুরাতন কসবা পৌর পার্কের মধ্যে কলেজ পড়ুয়া দুই শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে অস্ত্র ঠেকিয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে অবৈধভাবে আটক রাখার অভিযোগে পুলিশ তিন উঠতি বয়সের চার সন্ত্রাসীকে একটি বার্মিজ চাকুসহ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে,যশোর শহরের বেজপাড়া রানার অফিসের মোড় এলাকার রফিকুল ইসলাম ওরফে মনির ছেলে সাজিদুল ইসলাম আরমান,শহরের সিটি কলেজপাড়ার মৃত সিরাজুল হক খোকনের ছেলে ইয়াছিন হক সিয়াম ওরফে মোঃ সিয়াম , কারবালা কবরস্থান পাড়ার মফিজুর রহমানের ছেলে মাহিনুর রহমান সান ওরফে সাদিকুর রহমান সান ও শহরের বকচর হুশতলার শফিকুল ইসলামের ছেলে জুবায়ের ইসলাম ওরফে রনি। এ ঘটনায় কোতয়ালি থানায় রোববার ১৭ নভেম্বর রাতে মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের সোমবার ১৮ নভেম্বর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাটি করেন, যশোর সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে মেহেদী হাসান মিশন।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন,তার চাচাতো ভাই একই গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে রিয়ান হাসান (১৭) যশোর এমএম কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র। সে গত রোববার ১৭ নভেম্বর বিকাল অনুমান সাড়ে ৪ টার সময় তার বান্ধবী সদর উপজেলার সমসপুর গ্রামের জামানের মেয়ে জাকিয়া জামানের সাথে শহরের পৌর পার্কের মধ্যে বসে কলেজের পড়া লেখা নিয়ে আলাপ আলোচনা করছিল। ওই সময় উল্লেখিত আসামীরা কলেজ দুই শিক্ষার্থীর কাছে যেয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বলে তারা দু’জন অনৈতিক কাজ করেছে। সিয়াম বার্মিজ চাকু বের করে বলে এখন ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। তখন জাকিয়া জামানকে উক্ত স্থান হতে বাড়িতে পাঠায়। তারপর রিয়ন হাসানের মোবাইল ফোন থেকে উক্ত সিয়াম বাদির মোবাইল ফোনে ফোন করে ঘটনার বিষয় জানিয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বলে চাঁদার টাকা না দিলে রিয়নকে গুম করে ফেলবে। তখন বাদি আসামীদের উক্ত পরিমান চাঁদার টাকা দিতে রাজী হলে রিয়ন হাসানকে জোর পূর্বক উক্ত স্থান থেকে তুলে নিয়ে পৌর পার্কের সামনে রেষ্টুরেন্টে নিয়ে আটকে রাখে। তৎক্ষনিকভাবে বদি কোতয়ালি পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ বাদিসহ স্থানীয় জনগন নিয়ে পৌর পার্কের আশপাশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে সিয়াম,সাদিকুর রহমান সান ও জুবায়েরকে আটক করে। সে সময় তাদের সহযোগী সাজিদুল ইসলাম আরমান পালিয়ে যায়। পুলিশ সিয়ামের দখল হতে একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করে। বাদির ভাই রিয়ন হাসানকে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের কবল থেকে উদ্ধার করে। উক্ত চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের আটকের সময় স্থানীয় জনগন তাদেরকে গণপিটুনী দেয়। এতে তারা সামান্য আহত হয়। পলাতক আসামী সাজিদুল ইসলাম আরমানকে সোমবার ১৮ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শহরের বস্তাপট্টি মোড় থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিয়ামের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় একটি মাদক ও দস্যুতা আইনে দু’টি মামলা চলমান রয়েছে।