হাবিপ্রবিতে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে প্রভাব খাটিয়ে ৩০ মিনিট মেইন গেটে আটকে রাখেন সমন্বয়ক

দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবির) সময়ন্বয়কদের একের পর এক অবৈধ আবদার যেন থামছেই না। কিছু দিন আগে সুজন ইসলাম নামের এক সমন্বয়ক প্রভাব খাটিয়ে আবাসিক হলের রুম দখল করেছিলেন। এবার সুজন রানা নামের আরেক সমন্বয়ক অসুস্থতার অজুহাতে বাড়িতে পৌঁছে দিতে করেছেন অ্যাম্বুলেন্সের আবদার।

গতকাল মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে দুপুর দুইটার পর ত্রিশ মিনিটের অধিক সময় মেইন গেটের সামনে আটকে রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান বাস। এতে ভোগান্তিতে পড়েন বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা। বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেবা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জুলাই মাসে হওয়া আন্দোলনে প্রথমদিকে অংশ নিয়েছিলেন সুজন রানা। মঙ্গলবার তিনি তার গ্রামের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্সে করে যাবেন বলে আবেদন করেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. এমদাদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনে কোনো শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষক অসুস্থ হলে তাকে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বাড়িতে পোঁছায় দিতে হবে এমন আইন নেই। মানবিকতার দিক বিবেচনা করে আমরা তাকে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছি।

পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা মানবিকতার খাতিরে আমাদের পরিবহন ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে থাকি। আইনে না থাকলেও সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজনকে ওই গাড়ির দায়িত্বে থাকতে হয়। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল যে কোনো শিক্ষকের নাম বা সুপারিশ থাকলে যিনি সুপারিশ করেন আমরা গাড়ি তার দায়িত্বে ছেড়ে দিয়ে থাকি। এমদাদুল স্যারকে সুপারিশের বিষয়ে কল দিলে তিনি এবিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। তখন আমরা গাড়ি দিতে অস্বীকৃতি জানাই। তখন আবেদনকারী কয়েকজন ছেলেসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।

সমন্বয়ক সুজন রানা বলেন, আমি যতবারই অ্যাম্বুলেন্স নিয়েছি আবেদন করেই নিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন থেকেই আমার পায়ে রিং ছিলো। কিন্তু গত পরশু রংপুরে আমার পায়ের অপারেশন করে রিং বের করে ফেলা হয়। এই অপারেশনের জন্য আমার হল সুপার এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক স্যারের অনুমতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে আমাকে রংপুরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আমার পায়ে রিং না থাকায় বর্তমানে আমাকে নড়াচড়া করতে ডাক্তার নিষেধ করেছেন। যার ফলে আমি বাসায় যাওয়ার জন্য আবারও আমার হল সুপার এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক স্যারদের স্বাক্ষরসহ পরিবহন শাখায় আবেদন জমা দেই। তখন পরিবহন শাখার পরিচালক স্যার, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক স্যারকে কল দিলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তখন আমি বাধ্য হয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ডেকে নিই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল বন্ধ করে দিই। আমাকে যদি আগেই বিষয়টি অবগত করা হতো তাহলে আমি নিজস্ব ব্যবস্থায় চলে যেতে পারতাম। কিন্তু তারা আমাকে অবগত না করে আজকে যখন আমি বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হই তখন বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। আমি চাই ভবিষ্যতে যেনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে এমন ভোগান্তিতে পড়তে না হয় ।তবে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নুসরাত জাহান সাংবাদিকদের বলেন, সমন্বয়ক পরিচয়ে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেয়ার সুযোগ নেই। অতিরিক্ত সুবিধা নেয়া অবৈধ।