বন্ধুর সাথে ঘুরতে এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: কুমিল্লা থেকে বন্ধুসহ চট্টগ্রামে ঘুরতে এসে পথ হারিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক কিশোরী। ছেলে বন্ধুকে আটকে রেখে দুই দফা দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই কিশোরী। গতকাল সোমবার রাতে নগরের খুলশী থানার দক্ষিণ খুলশী একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পরে খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের একটি দল ছেলে বন্ধুসহ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। এসময় ধর্ষণে জড়িত থাকায় আবুল কালাম নামে এক রিকশাচালককে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে শিক্ষার্থীরা।

ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী পাপ্পু বলেন, ‘সোমবার রাত আড়াইটার দিকে কয়েকজনের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যাই। তখন মেয়েটি অসুস্থ অবস্থায় ছিল। আমরা তাকে উদ্ধার করি। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করি। এই সময় বাকিরা পালিয়ে যায়। ভোর ৫টার দিকে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, কিশোরীর জবানবন্দি নিয়ে তার শারীরিক পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

কিশোরীর ছেলে বন্ধু জানান, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা মানসিকভাবে অসুস্থ। বাবা ছোটবেলায় মারা গেছেন। মোবাইলের মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। কুমিল্লার লালমাইয়ে তাদের বাড়ি। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে কুমিল্লা থেকে তারা রওনা হয়। সন্ধ্যায় তারা পাহাড়তলী রেলস্টেশনে নামেন। অপরিচিত জায়গা হওয়ায় রেললাইন ধরে হাঁটছিলেন দুজন। রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঝাউতলা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছান। সেখানে একজনের সহায়তা চাইলে তাদের নির্জন স্থানে নিয়ে যায় ওই ব্যক্তি। এরপর সেখানে কয়েকজন মিলে ওই তরুণের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেয়। তাতে ভয় পেয়ে যান তারা।

তিনি আরও জানান, রেলস্টেশন থেকে বের হয়ে বাড়ি যাওয়ার পথ খুঁজছিল তারা। সহায়তা চান এক ব্যাটারি রিকশাচালকের। রিকশাচালক তাদের নগরের বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর রাস্তায় ঘুরাতে থাকে। একপর্যায়ে দক্ষিণ খুলশীর পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আরও তিনজন ছিল। রাতে আর ট্রেন নেই বলে রাতে তাদের সেখানে থাকতে বলে। একপর্যায়ে তাকে এক রুমে আটকে রেখে চারজন মিলে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ঘণ্টাখানেক পরে তাদের সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়।

তিনি জানান, রাস্তায় এসে তারা আরেকটি ব্যাটারি রিকশাচালকের মুখোমুখি হন। তাদের বিধ্বস্ত দশা দেখে ঘটনা জানতে চায় ওই রিকশাচালক। তাকে ঘটনা বলেন তারা। ওই রিকশাচালক বিচার করার নামে তাদের আবার সেখানে নিয়ে যায়। আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে এই রিকশাচালকও কিশোরীকে ধর্ষণ করে।