আটকে থাকা সিনেমাগুলো নিয়ে সুখবর দিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ

ঢাকা অফিস: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড এবং সেখানে আটকে থাকা সিনেমাগুলো নিয়ে সুখবর দিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। জানালেন, শিগগিরই তারা আটকে থাকা সিনেমাগুলো নিয়ে বসবেন এবং চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডকে পুনর্গঠন করবেন।

রবিবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে দপ্তর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

সেখানে সাংবাদিকরা তথ্য উপদেষ্টাকে সেন্সর বোর্ড এবং আটকে থাকা সিনেমাগুলো নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘সেন্সর বোর্ডের কারণে যেসব সিনেমা আসেনি সেগুলো নিয়ে আমরা দ্রুতই বসব। এছাড়া সেন্সর বোর্ডকে দ্রুততার সঙ্গে পুনর্গঠন করব। সেন্সর বোর্ড না থাকার যে দাবি, সেটিও আমরা আলোচনা করে যৌক্তিকতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।

পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলে বেশ কিছু সিনেমাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। নানা কারণ দেখিয়ে মাসের পর মাস বছরের পর বছর সেসব সিনেমা আটকে রাখা হয়েছে। কোনোটি আবার প্রথমে ছাড়পত্র পেলেও পরে সেটির প্রদর্শনীর উপর দেওয়া হয়েছে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা।

এই তালিকায় আছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’, যেটি ২০১৬ সালের হলি আর্টিজান হামলার উপর নির্মিত হয়েছে। কয়েক বছর ধরে সিনেমাটি আটকে আছে সেন্সর বোর্ডে। এই সিনেমা বানানোর জন্য ২০২০ সালে নির্মাতা ফারুকীকে লিগ্যাল নোটিশ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল।

তালিকায় আছে নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত ‘রানা প্লাজা’। এই সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে ২০১৩ সালে সাভারের রানা প্লাজা ধস এবং ঘটনার ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তুপ থেকে রেশমা নামে এক তরুণীকে জীবিত উদ্ধারের আশ্চর্যজনক ঘটনা নিয়ে। ১১ বছর ধরে আটকে আছে সেই সিনেমাও। পরিচালক আশায়, এবার যদি কিছু হয়।

এছাড়া এনামুল করিম নির্ঝরের ‘নমুনা’, রায়হান রাফির ওয়েব ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’সহ একাধিক সিনেমা আটকে আছে সেন্সর বোর্ডে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনের আমলে এভাবেই সেন্সর বোর্ডে আটকে দেওয়া হতো একের পর এক সিনেমা। বিশেষ করে যেসব সিনেমায় দেশ এবং সমাজের অন্যায়, অবিচার এবং দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হতো।

এবার সেই দৈন্যদশা থেকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বের করে আনার ইঙ্গিত দিলেন তথ্য উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। পাশাপাশি তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের জন্য স্বাধীন সাংবাদিক কমিশন গঠনের কথাও ভেবেছে বলে জানান।