বিনোদন ডেস্ক: ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে তার বর্তমান সম্পর্ক কেমন- এ নিয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন চিত্রনায়িকা শবনম ইয়াসমিন বুবলী। কয়েক দিন আগেও তিনি দাবি করেন, কিং খানের সঙ্গে তার এখনো ডিভোর্স হয়নি। তারা আলাদা থাকছেন মাত্র। সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিচ্ছেন।
অথচ, শাকিব খান বছর খানেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, বুবলীর সঙ্গে তার সবকিছু শেষ। প্রথম স্ত্রী অপু বিশ্বাসের মতো বুবলীও তার জীবনে অতীত। তা সত্ত্বেও গণমাধ্যমে নায়িকার এই ধরনের বক্তব্যে বিরক্ত শাকিব খান এবং তার পরিবার। ফলে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
শাকিবের পরিবারের এক সদস্য নামপ্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, সন্তান শেহজাদ খান বীরের অজুহাতে বুবলী যেন শাকিবের অফিসে না যান, সে বিষয়ে তাকে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, বীরকে শাকিবের বাসায় নিয়ে এলেও যেন বুবলী বাদে তার পরিবারের অন্য কেউ নিয়ে আসেন।
শাকিবের পরিবারের ওই সদস্য এও দাবি করেন, সিনেমা মুক্তির আগে বা ব্যক্তিগত জীবনে নানা ঘটনার কোনো সম্পর্ক না থাকার পরও শাকিবের ব্যক্তিগত জীবন জড়িয়ে বিভিন্ন কথা বলেন বুবলী, যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। ভবিষ্যতে এমন মিথ্যাচার করলে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারে শাকিবের পরিবার।
অর্থাৎ, শাকিব খানের পরিবারের ওই সদস্যের দেওয়া তথ্যমতে, কিং খানের অফিস এবং বাসা দুই জায়গাতেই নিষিদ্ধ বুবলী। ওই সদস্যের দাবি, ছেলে বীরকে শাকিবের অফিস বা বাসায় নিয়ে গেলেই ছবি তোলার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন বুবলী। বোঝাতে চেষ্টা করেন, তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক।
অথচ শাকিব খানের পরিবার সূত্রে খবর, কিং খানকে বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্রী খোঁজা হচ্ছে। শাকিবের মতামত নিয়েই নাকি তার মা-বাবা, বোন, ভগ্নিপতি মিলে পাত্রী দেখা শুরু করেছেন।
ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার একটি মেয়ের ব্যাপারে ফিসফাসও শোনা যাচ্ছে। মেয়েটি নাকি যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসা বিষয়ে লেখাপড়া করে দেশে ফিরেছেন। শাকিবের ডাক্তার মেয়ে পছন্দ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকেই তৃতীয়বারের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসতে পারেন কিং খান।
তাহলে অপু বিশ্বাস? তার সঙ্গে শাকিবের পুনর্মিলনের খবর শোনা যাচ্ছে বছরখানেক ধরে। সে ব্যাপারটাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন কিং খানের পরিবারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সদস্য। তিনি বলেন, ‘শাকিবের সঙ্গে অপুর সম্পর্ক বহু আগেই শেষ। শুধু জয়ের মা হিসেবে শাকিব তাকে যথাযথ সম্মান করেন।’
গত বছর ছেলে আব্রাম খান জয়কে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একসঙ্গে ঘুরে বেড়ান শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। তারপর থেকেই তাদের পুনর্মিলনের গুঞ্জন ওঠে জোরালোভাবে। যদিও অপু বিশ্বাস কখনোই এমন দাবি করেননি কোথাও। বরং সাংবাদিকরা এ ধরনের প্রশ্ন করলেই কৌশলে এড়িয়ে গেছেন বারবার।
২০০৮ সালে গোপনে বিয়ে করেছিলেন ঢালিউডের একসময়ের সুপারহিট জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। ২০১৭ সালে প্রকাশ হয় এই খবর। ওই বছরের এপ্রিলে ছেলে জয়কে কোলে নিয়ে অপু হাজির হন একটি টিভি চ্যানেলে। কাঁদতে কাঁদতে প্রকাশ করেন শাকিবের সঙ্গে তার বিয়ে ও সন্তান জন্মদানের কথা।
২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্ম হয় শাকিব খানের বড় ছেলে জয়ের। শোনা যায়, তখন দ্বিতীয় স্ত্রী বুবলীর সঙ্গে শাকিবের প্রেম জমে ক্ষীর। সে কথা জানতে পেরেই নাকি তড়িঘড়ি টিভি চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে হাজির হন অপু বিশ্বাস। বিয়ের ৯ বছর পর ফাঁস করেন সবকিছু।
ওই ঘটনা অবশ্য কাল হয়েছিল অপুর জন্য। কয়েক মাস পরই নানা অভিযোগ তুলে তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠান শাকিব খান। তিন মাস পর ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারিতে সে ডিভোর্স কার্যকরও হয়ে যায়।
এরপরই শাকিব খান বিয়ে করেন তার ধারাবাহিক এক ডজন সিনেমার নায়িকা বুবলীকে। গুঞ্জন সত্যি হয় যে, অপু বিশ্বাসের সঙ্গে দাম্পত্যে থাকাকালীনই তিনি প্রেম করছিলেন বুবলীর সঙ্গে। এ সংসারে জন্ম হয় কিং খানের দ্বিতীয় পুত্রসন্তান শেহজাদ খান বীরের। আমেরিকার একটি হাসপাতালে মা হন বুবলী।
কিন্তু টেকেনি দ্বিতীয় সংসারও। বহু আগেই শাকিব খান জানিয়ে দিয়েছেন, বুবলী তার জীবনে অতীত। তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্কই এখন আর নেই। কিন্তু বুবলী প্রায়ই দাবি করেন, তাদের ডিভোর্স হয়নি। তারা আলাদা থাকছেন মাত্র। শাকিব খান ও তার পরিবারের বিরক্তির কারণ এটাই।