যশোর প্রতিনিধি
যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের গোবিলা গ্রামে স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে যুবলীগ নেতা শিমুল হোসেনকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজন বিরাজ করছে। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়ে জড়িতদের আটকের দাবি জানিয়েছেন। শিমুলের নিথর দেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরিবারের সদস্যরা ঘটনায় জড়িতদের নাম উল্লেখ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। খুনের ঘটনার খবরে পুলিশের কয়েকটি টিম ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। জড়িতদের শনাক্ত ও আটকে অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী ঘরানার উঠতি বয়সীদের সাথে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিরোধ বাধে গোবিলা গ্রামের সাবেক মেম্বার মকলেছুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের য্বুলীগের সাধারণ সম্পাদক শিমুল হোসেনের। উঠতি বিতর্কিতদের মধ্যে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সজীব ও বুলবুল কয়েকদিন আগে তাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকিও দেয়। আর বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে চার-পাঁচজনের একটি দুর্বৃত্ত গোবিলা গ্রামে গিয়ে চড়াও হয় শিমুলের ওপর। প্রথমে বাকবিতন্ডা ও পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়। ওইসময় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শিমুল। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাত নয়টা দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার সাকিব মো. আল হাসান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে আসা নিহত শিমুলের ভাই রাকিব জানিয়েছেন,এটা স্রেফ রাজনৈতিক মার্ডার। এলাকার সজীব ও বুলবুলের নেতৃত্বে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তিনি দ্রুত তাদের আটক দাবি করেন।
হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়া নিহতের স্ত্রী নাসরিন বেগম জানিয়েছেন, এলাকার পরিচিত লোকজনই তাকে হত্যা করেছে। শুধু রাজনীতি করার কারণেই এই খুন। এলাকায় অনিয়ম অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় অপরাধীরা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তার স্বামীর। তিনি জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
নিহত শিমুলের নামে কয়েকটি মামলা রয়েছে। হত্যাকান্ডটি রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিয়ে হয়েছে। এলাকার একটি কিশোর গ্যাং এই হত্যায় জড়িত। শিমুল ওয়ার্ড যুবলীগের সম্পাদক ছাড়াও স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য। তার তিন মেয়ে রয়েছে। আধিপত্য নিয়ে এলাকায় তার কয়েকটি প্রতিপক্ষ তৈরি হয় বলেও তথ্য মিলেছে। ঘটনার পর এলাকায় একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। পরিবারের মৌখিক অভিযোগ ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকান্ড বলেও জানা গেছে। ঘটনায় যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।