মোল্লাবাড়ি বস্তি পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান যা বল্লেন

ঢাকা অফিস: রাজধানীর কারওয়ান বাজার সংলগ্ন আগুনে পোড়া মোল্লাবাড়ি বস্তি পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের পর সেখান থে‌কে বের হওয়ার মতো ঠিক তেমন কোনো রাস্তা ছিল না। হয়ত এ কারণে দুইজনের প্রাণ গেছে এবং অনেকে দগ্ধ হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই বস্তির মালিককে খুঁজছি। তাছাড়া এখানে লাগা আগুনের ঘটনায় নাশকতা আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শনিবার গভীর রাতে আগুনের পর দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএম‌পি ক‌মিশনার হা‌বিবুর রহমান।

ডিএমপি কমিশনার ব‌লেন, এখানে প্রায় ৩০০ পরিবার বাস করে। এদের বে‌শিরভাগই কারওয়ান বাজা‌রে মাছ কা‌টে। গ‌ভীর রা‌তে এখা‌নে অগ্নিকা‌ণ্ডের ঘটনা ঘ‌টে। এরপর জানাজা‌নি হ‌লে ফায়ার সা‌র্ভিসে খবর দি‌লে ফায়ার সা‌র্ভিসের ক‌য়েকটা টিম এখা‌নে এসে দীর্ঘ সময় চেষ্টা ক‌রে পৌনে চারটার দি‌কে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই আগু‌নে দুজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। এছাড়া আরও দুইজন হাসপাতা‌লে র‌য়ে‌ছেন; তাদের ম‌ধ্যে এক শিশু এবং একজন ম‌হিলা।

কমিশনার হাবিবুর রহমান ব‌লেন, আমরা এখা‌নে যতটুকু দে‌খে‌ছি… আগুনের কারণ সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা যায়‌নি। ফায়ার সা‌র্ভিস সেটার সম্প‌র্কে তা‌দের তদন্ত রি‌পোর্ট দি‌তে পার‌বেন। এটা তদ‌ন্তের পর বোঝা যা‌বে এটা কোনো নাশকতা কি না। কিংবা অসতর্কতামূলক কার‌ণে বা বৈদ‌্যুতিক শর্ট সা‌র্কিটের কারণে ঘটে‌ছে; সেটা আমা‌দের তদন্ত শে‌ষে বে‌রিয়ে আস‌বে।

ব‌স্তির মা‌লিকানা নি‌য়ে জানার চেষ্টা চলছে জানিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, পার্শ্ববর্তী বা‌ড়ির একজন মা‌লিক এই ব‌স্তির মা‌লিক। ব‌স্তি আকা‌রে ঘর ক‌রে এখা‌নে তি‌নি ভাড়া দি‌চ্ছি‌লেন। এখা‌নে বড় যে সমস‌্যা‌টি ছিল সেটা হ‌চ্ছে এখান থে‌কে বের হওয়ার মতো ঠিক তেমন কোনো রাস্তা নেই। এই ব‌স্তির এটাই ছিল সব থে‌কে বড় সমস‌্যা।’

নিহত‌দের প‌রিচয় প্রসঙ্গে তি‌নি ব‌লেন, ‘নিহত‌দের প‌রিচয় স্পষ্টভা‌বে জানা যায়‌নি। কারণ যারা পু‌ড়ে‌ গেছে তারা এমনভা‌বে পু‌ড়ে‌ছে তা‌দের শনাক্ত করা সম্ভব হয়‌নি। ত‌বে দুইজন নি‌খোঁজ আছে ধারণা করা হ‌চ্ছে। যারা নি‌খোঁজ আছে তারাই হয়‌ত এই দুইজন। মরদেহ দু‌টি থে‌কে আমরা ডিএনএ সংগ্রহ ক‌রে‌ছি। যে দুইজনকে খুঁজে পাওয়া যা‌চ্ছে না, তা‌দের প‌রিবা‌রের সদস‌্যদের ডিএনএ-এর স‌ঙ্গে মি‌লি‌য়ে দেখা হ‌বে নি‌খোঁজ ব‌্যক্তিরাই এই দুইজন কি না।

ব‌স্তির মা‌লিক দায় এড়া‌তে পা‌রেন কি না? তার বিরু‌দ্ধে কোনো ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে কি না এমন প্রশ্নের জবা‌বে তি‌নি ব‌লেন, এ‌টি তদন্ত সা‌পে‌ক্ষে বোঝা যা‌বে। এই ব‌স্তির সব‌কিছু স‌ঠিকভাবে ছিল কি না সেটা তদন্ত সা‌পে‌ক্ষে দেখার পর বলা যা‌বে তার বিরু‌দ্ধে কি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।
এদিকে ভোর রাতে লাগা আগুন প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত চারটার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। সে সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট কাজ করেছে।