চাঁচড়া ফাড়ি পুলিশ ৪ জুয়াড়িকে আটক করে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় তুমুল হৈচৈ

যশোর প্রতিনিধি: যশোরেরর চাঁচড়া রায়পাড়া বিল্লাল মসজিদ এলাকার একটি ডেরা থেকে ৪ জুয়াড়িকে আটক করে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় তুমুল হৈচৈ শুরু হয়েছে চাঁচড়া ফাড়ি পুলিশকে ঘিরে।

জুয়োর কোটের ৩০ হাজার টাকা নিয়ে জুয়াড়িদের মুক্তি দেয়ার ঘটনায় রীতিমত ক্ষুব্ধ ওই এলাকার মুরব্বীরা। আর পুলিশি আটক এড়িয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওই জুয়াড়ি চক্র। স্থানীয়রা দ্রুত ওই জুয়াড়িদের ফের আটক দাবি করেছেন একই সাথে সংশ্লিষ্ট এসআই সাঈদুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, রায়পাড়া বিল্লাল মসজিদের পাশের মৃত রুহুল আমিন হুজুরের পরিত্যাক্ত বাড়িতে তিন কার্ড জুয়ো ও পাশের একটি চায়ের দোকানকে ঘিরে অন লাইন জুয়ো অবাধে জমজমাট আসর চলছে দিনের পর দিন। এলাকার হাড়ি পাতিল বিক্রেতা খ্যাত হাদির নেতৃত্বে চলে এই জুয়ো। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে এই অনৈতিকতা। তিন তাস কাটাকাটি অন লাইনসহ নানা নামে চলা এই জুয়োর খবরে সেখানে বুধবার অভিযান পরিচালনা করেন চাঁচড়া ফাঁড়ির এসআই সাঈদুর রহমানসহ একটি টিম। এসময় জুয়োর কোট থেকে আটক করা হয় হাদি, এই এলাকার জসীম, রুবেল ও অজ্ঞাত একজনসহ ৪ জনকে। স্থানীয়দের দাবি আটক হাদি গংকে থানায় নেয়া হবে এবং মামলা দেয়া হবে বলে বুলি আওড়ান এসআ্ই সাঈদুর রহমান। কিন্তু ওখানে ঘণ্টাখানেক সময় কাটিয়ে কানাঘুষা করে তাদের ছেড়ে দিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ওই জুয়োর কোটে থাকা টাকা এবং আটক হওয়া কয়েকজনের কাছ থেকে মিলিয়ে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে আসেন এসআই সাঈদুর রহমান। এরপর ওই ৪ জুয়াড়িকে ছেড়ে দিয়ে আসেন।
এলাকাবাসী বলছেন, পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ওই চক্রটি ফের ৩ তাস ও অনলাইন জুয়ো চালাচ্ছে। ওই চক্রের নেপথ্যে মৃত রুহুল আমিন হুজুরের ছেলে হাবিব রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ওই ডেরায় এলাকার উঠতি যুবক, আলোচিত জুয়াড়িরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। বিভিন্ন সময় দুর-দুরান্ত থেকেও জুয়াড়িরা এখানে এসে টাকা হাত বদল করছে। সংঘবদ্ধ হাদি চক্র সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালাচ্ছে নিষিদ্ধ জুয়ার আসর। এই জুয়াকে কেন্দ্র করে সেখানে মাদক বিকিকিনিও চলছে সমানতালে। জুয়া ও মাদকের লোভ সামলাতে না পেরে অনেকে পথে বসছেন। এই জুয়ার আসর নিয়ে অঞ্চলের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন এ চক্রের জালে পড়ে স্থানীয়রা টাকা পয়সা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। এ কারণে ওই হাদি চক্রকে দ্রুত আটক দাবি স্থানীয়দের।

এলাকাবাসী জানান, এই জুয়াড়িদের ছেড়ে দেয়ার প্রতিবাদে এবং তাদের অপতৎপরতা রুখতে আগামী শুক্রবার বিল্লাল মসজিদে জুম্মার নামাজ শেষে বিশেষ সভা আহবান করেছেন মসজিদ কমিটি। তারা মসজিদ এলাকায় জুয়ো ও মাদকের আসর করতে দেবে না বলেও জানিয়েছেন। একই সাথে জুয়াড়িদের আটক করে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় এসআই সাঈদুরের বিরুদ্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছেন।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন আলমগীর হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, জুয়াড়ি আটক করে ছেড়ে দেয়া ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগের ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন। প্রয়োজনে ইনচার্জ তারিকুল ইসলাম ও এসআই সাঈদুরের সাথে কথা বলবেন। জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে তিনি নিজে অভিযান পরিচালনা করবেন।
এ ব্যাপারে কথা হয় চাঁচড়া ফাড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তারিকুল ইসলামে সাথে। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জুয়াড়ির ডেরায় অভিযানের খবর স্ঈাদুর রহমান তাকে জানায়নি। সেখান থেকে টাকা আদায় ও জুয়াড়ি ছেড়ে দেয়ার অভিযোগের বিষয় নিয়ে তিনি স্থানীয়দের সাথে কথাও বলবেন। এ ঘটনায় যদি সাঈদুর জড়িত থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, অনেক সময় স্থানীয়রা ঘটনা রং চং মাখিয়ে প্রচার করে। দেখা গেল পুলিশের ধাওয়ায় জুয়াড়িরা পালিয়ে গেছে, আর প্রচার হল পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। কাজেই তদন্ত করে দেখতে হবে আসলেই ঘটনা কি ছিল। যাহোক মাদক জুয়োসহ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করছে।