যশোরে হাসপাতালে নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের আদায়কৃত চাঁদার টাকা ফেরত

যশোর প্রতিনিধি 
নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আগমনকে টার্গেট নিয়ে কর্মরত সেবিকাদের কাছ থেকে মাথা পিছু আদায়কৃত ৫শ’ টাকা ফেরত দিয়েছে। টাকা ফেরত দেওয়ায় সেবিকাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা অবিলম্বে কথিত সাধারণ সম্পাদকসহ গঠিত কমিটি বিলুপ্তিসহ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব দাবি করেছেন। নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে বিভিন্ন উপলক্ষকে টার্গেট নিয়ে সেবিকাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের হোতা সাধারণ সম্পাদক তহমিনা সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বেজায় ক্ষেপেছেন। তিনি তার মনোনীত কমিটির অন্যান্য পদে অধিষ্ঠিত নেতৃবৃন্দকে আদায়কৃত চাঁদার টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিলে রোববার ৩০ জুলাই সকাল থেকে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ডের ইনচার্জের কাছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে কর্মরত সেবিকাদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দিতে দেখা গেছে। তাদের উপার্জিত বেতনের টাকা ফেরত দেওয়ায় অধিকাংশই সেবিকাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসতে দেখা গেছে। অধিকাংশই সেবিকারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গঠিত কমিটি বিলুপ্তি করে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন দেখতে চান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন সেবিকারা বলেছেন, নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স তহমিনা খাতুন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মাস কয়েক পূর্বে কর্মরত সেবিকাদের মধ্যে যারা বেশ প্রতিবাদি হয়ে ওঠা সেবিকাদের নিয়ে নিজেই একটি কক্ষে আলোচনার মাধ্যমে সিলেকশন করে গঠন করেন নার্সেস এ্যাসোসিয়েশন। নিজে সাধারণ সম্পাদক পদ রেখে সভাপতি পদ দেন মোফাজ্জেল নামে এক ব্রাদারকে। এছাড়া, অন্যান্য পদগুলো তার মনোনীত সেবিকাদের মধ্যে বন্টন করেন। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা কুক্ষিগতর উদ্দেশ্যে গঠিত কমিটির বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন উপলক্ষকে টার্গেট নিয়ে চাঁদা আদায়ের দায়িত্ব দেন। এ্যাসোসিয়েশনের রশিদ ছাড়াই সাধারণ সম্পাদক তহমিনা কর্মরত সেবিকাদের কাছ থেকে কখনও মাসিক আবার কখনও বিশেষ উপলক্ষকে টার্গেট করে টাকা আদায়ের দায়িত্ব দেন। সেবিকাদের কাছে চাঁদা চাইলে অধিকাংশ সেবিকারা টাকা কোন খাতে ব্যয় করা হবে কিংবা ইতিপূর্বে উত্তোলনকৃত টাকা কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট হিসাব দাবি করেন। নিরীহ সেবিকাদের দাবিকৃত হিসাবকে উপেক্ষা করে তহমিনা খাতুনের গড়া কমিটির নেতৃবৃন্দ চাঁদা আদায় চালিয়ে যান। উত্তোলনকৃত চাঁদার টাকা তহমিনা খাতুনের কাছে জমা দেন। সেবিকাদের উপার্জিত বেতনের টাকা চাঁদা হিসেবে পাওয়ার পর সাধারণ সম্পাদক তার ইচ্ছা মাফিক খরচ করেন। প্রতিবাদ করলে তাকে কমিটি থেকে নিয়ম বর্হিভূতভাবে সরিয়ে দেন। সর্বশেষ খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পরিদর্শনে আসেননি। তাছাড়া,আগামী দিনে জাতীয় একটি দিবসকে টার্গেট নিয়ে ফের কর্মরত সেবিকাদের কাছে নির্দিষ্ট একটি অংকের টাকা চাঁদা চাইবে কিনা এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কর্মরত সেবিকাদের মধ্যে। হাসপাতালের সূত্রগুলো বলেছেন,নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের কথিত সাধারণ সম্পাদক তহমিনা খাতুন নিজেই কমিটি গঠন করে হাসপাতালে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন নিয়ে নানা তালবাহনা করেন। তার ডিউটির সময় তিনি রোগীদের সেবা না দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরেঘুরে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। অথচ তার সাথে ওয়ার্ডে যারা দায়িত্ব পালন করেন তারা রোগীদের চিকিৎসার চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েন। অত্র হাসপাতালে কর্মরত সেবিকারা নির্বাচনের মাধ্যমে নার্সেস এ্যাসোসিয়েশন গঠনের দাবি তুলে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তাদের কথা কে শোনেন। এই হাসপাতালে নার্সেস এ্যাসোসিয়েশন গঠন হয়েছে কিভাবে বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। ইতিপূর্বে অত্র হাসপাতালে দায়িত্ব সংবাদ কর্মী নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের ব্যাপারে তৎকালীন নেতৃবৃন্দকে প্রশ্ন করলে কেউ কোন উত্তর দিতে পারেনি। কেউ কেউ সাংবাদিকদের বলেছেন,কিভাবে তারা সেবিকাদের ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ হয়েছেন কিছুই জানেন না। বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ এই ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রসহ কোন কিছু দেখাতে বা বলতে পারেনি।