যশোরে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে দিপক অধিকারী ওরফে সাগর

যশোর অফিস 
 দিপক অধিকারী ওরফে সাগর। ‘নুন আনতে, পান্তা ফুরাতো এক সময়’। করতেন যশোর শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্যানে করে পেয়ারা বিক্রি। হঠাৎ একদিন বনে যান ডিবি পুলিশের কথিত সোর্স। তাতেই ফিরে গেছে তার ভাগ্য। বর্তমান চলাফেরা করেন প্রাইভেট কারে। পরিচয় দিচ্ছেন ডিবি পুলিশের অফিসার। তার ভয়ে শংকিত শহরের পুরাতন কসবা এলাকার ছোট বড় ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে এলাকার যুবকদের‌। তার কথার বাইরে গেলেয় পড়তে হচ্ছে নানা হুমকির মুখে।
সূত্র জানায়, সাড়ে চার বছর আগে মাগুরার ঢাকা রোড সংলগ্ন এলাকার অমল অধিকারীর ছেলে শহরের পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে আস্তানা গাড়েন। এরপর শহরে ভ্যানে করে পেয়ারা বিক্রি শুরু করে করেন। বিভিন্ন সময় দিনমজুরির কাজও করেছেন।  তারপর একদিন এলাকায় ডিবি পুলিশে তার চাকুরি হয়েছে বলে মিষ্টি খাওয়ান অনেককে। বর্তমান তার রয়েছে একটি প্রাইভেট কার যার নং (ঢাকা মেট্ট খ ১২০৬৫৫) ও একটি মাইক্রোবাস যার নং ( ঢাকা মেট্ট চ ১৩৯৮৫৪)। যা দুটি গাড়ির বাজার মুল্য প্রায় ২৩/২৫ লক্ষ টাকা। গাড়ি দুটিতে ডিবি পুলিশের স্টিকার ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। তাছাড়া তার নিজের চলাচলের জন্য রয়েছে একটি পালসার মোটরসাইকেলও।
এছাড়া দিপক অধিকারী নামে তার নিজ ফেসবুক আইডিতে ডিবি পুলিশের বিভিন্ন অভিযান ও গ্রেপ্তারি ব্যক্তি ও আটক জিনিসের ছবি পোষ্ট করে তিনি আটক করেছে বলে এলাকার সকলের সাথে বলে বেড়ান বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়। তাছাড়া তার ফেসবুক আইডি ঘুরে দেখা গেছে পুলিশের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি পোষ্ট, পুলিশের বিভিন্ন অফিসের সামনে দাাঁড়িয়ে ছবি ও পুলিশের লোগো ব্যবহার করা ট্রাকসুট পড়ে ছলি তুলে নিজ আইডিতে শেয়ার করে মানুষের কাছে ডিবি পুলিশ পরিচয় প্রদান করে।
পুরাতন কসবা কাঁঠালতলা এলাকার পারুল বেগম জানান, তার ছেলে সাজিদকে দিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয় দানকারি দিপক অধিকারী কিছুদিন জোরপূর্বক ইয়াবা বিক্রি করিয়েছেন। পরে তার ছেলে বিক্রি করতে অস্বীকার করলে তাকে খুন, গুমের ভয় দেখানো হয়। বর্তমানে তার ছেলে একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করে।
পালবাড়ি বাজারের প্লাসিক ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান হাফিজ জানান, প্রায়দিন রাতে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাবার সময় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে দিপক অধিকারী চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে দু’দিন মারপিটও করা হয়েছে।
শহরের এইচ এমএম আলী রোডের ভোলাশা মার্কেটের শ্রেয়া কসমেটিকসের স্বত্বাধিকারী গগন দেবনাথ জানায়, দিপক আমার কাস্টমার। সে আমাদের কাছে ডিবি পুলিশের অফিসার পরিচয় দিয়েছে। তাছাড়া মার্কেটের সকলে তাকে ডিবি পুলিশ হিসাবে চেনে।
৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন মিলন জানান, ওই যুবক ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চার নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করছে বলে তার কাছে একাধিক অভিযোগ এসেছে। তিনি বিষয়টি থানার ওসিসহ বিভিন্ন মহলে জানিয়েছেন। কিন্তু তারপর ওই যুবকের কর্মকান্ড বন্ধ হয়নি।
ডিবি পুলিশের ওসি রুপণ কুমার সরকার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দিপক নামে আমাদের কোন সদস্য নেই। বিষয়টি খুব দ্রুত ব্যবস্তা গ্রহন করবেন বলে তিনি জানান।