আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গুরুতর অভিযোগ এক মার্কিন নারীর বিরুদ্ধে। তিনি কলোরাডোতে একটি ফিউনেরাল হোম (যেখানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য প্রস্তুত করা হয়) চালাতেন। তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অন্তত ৫৬০টি মৃতদেহকে কেটে দেহের অংশ বেচে দিয়েছেন।
৪৬ বছর বয়সী ওই নারীর নাম মেগান হেস। তার ৬৯ বছর বয়সী মা শিরলি কোচকেও প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাকে দেওয়া হয়েছে ১৫ বছরের কারাদণ্ড। তিনি ওই দেহগুলোকে টুকরো করতেন বলে অভিযোগ।
মামলার প্রসিকিউটর টিম নেফ জানিয়েছেন, মা এবং মেয়ে কোচ আর হেস তাদের ফিউনেরাল হোমকে ব্যবহার করে দেহগুলোকে কাটাকুটি করতেন । এরপর সেই দেহের অংশ বিভিন্ন ল্যাবে বিক্রি করে দিতেন। বিচারক জানিয়েছেন, এই ধরনের দেহ বিক্রি করার ঘটনা ভীষণ যন্ত্রণার মাঝে ফেলেছে পরিবারগুলোকে।
২০১৬-১৮ সাল নাগাদ রয়টার্সের তদন্ত সিরিজে সামনে আসে এই দেহাংশ বিক্রি চক্রের কথা। এরপর এ নিয়ে তদন্তে নামে আমেরিকার বিখ্যাত তদন্ত সংস্থা এফবিআই। আসলে হেস আর কোচদের ওই ফিউমেরাল হোমের সাবেক কর্মীরা ফাঁস করে দিয়েছিলেন যে, ওখানে দেহ কেটে বিক্রি করার কাজ হয়।
মার্কিন জেলা বিচারপতি ক্রিস্টাইন আরগুয়েল্লো জানিয়েছেন, এমন আবেগপূর্ণ ব্যাপার আগে কোনো দিন দেখিনি, শুনিনি। বিচারপতি জানিয়েছেন, হেস আর কোচকে অবিলম্বে জেলে পাঠানো দরকার।
হেসের আইনজীবী জানিয়েছেন, আমার মক্কেলকে পুরো ডাইনি, দৈত্য বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। আসলে তিনি একজন ভেঙে পড়া মহিলা। ১৮ বছর বয়সে তিনি মারাত্মক সমস্যায় পড়েছিলেন। এদিকে হেস বিচারপতির সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তবে কোচ আদালতে জানিয়েছেন, তিনি তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত।
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হতেই একাধিক পরিবার কার্যত ভেঙে পড়েছে। তারা কিছুতেই মানতে পারছেন না তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ এভাবে কেটে অবৈধভাবে বিক্রি করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে তাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, ‘আমার মায়ের কাঁধ, হাঁটু, পা সব কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ভাবতে পারছি না এমন কিছু হতে পারে। এমন কোনো হিংসার ঘটনা ঘটতে পারে।
আমেরিকায় হৃৎপিণ্ড, কিডনিসহ যেকোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করা আইনবিরুদ্ধ। তবে সেগুলো দান করা যেতে পারে। আদালত জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পরিবারের অনুমতি ছাড়াই মৃতদেহ থেকে অঙ্গ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। আর সার্জিকাল ট্রেনিং কোম্পানি জানত না এগুলো অবৈধভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে।