যশোরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে আপন ভাইদের মধ্যে বিরোধে থানায় দু’টি মামলা

যশোর প্রতিনিধি
সদর উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপন ভাইয়ের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এক পক্ষ অপর পক্ষকে দায়ী করে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য তুলে কোতয়ালি মডেল থানায় শুক্রবার দিবাগত  গভীর রাতে দু’টি মামলা করেছে। মামলা দু’টির মধ্যে একটি মামলার বাদি হয়েছেন ঝাউদিয়া ৩নং ওয়ার্ড এর মৃত আফসার আলীর ছেলে আব্দুল ওহাব । তিনি মামলায় আসামী করেছেন, ৪জনকে। এরা হচ্ছে, মৃত আফসার আলীর ছেলে  আপন ভাই হাফিজুর রহমান, ভাইপো সুজন,সজল ও ভাবী মোছাঃ নুর নাহার। অপর মামলাটি করেন, হাফিজুর রহমান। তিনি মামলায় আসামী করেন, মৃত আফসার আলী মন্ডলের ছেলে আব্দুল ওহাব, ভাবী মোছাঃ মহিমা বেগম ও ভাইঝি মোছাঃ রিম্পা খাতুনসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন।
আব্দুল ওহাব তার মামলায় বলেন, হাফিজুর রহমানের সাথে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জায়গা জমি ও গাছ গাছালি ভাগ না করিয়া বাদির অংশের জায়গা জমি ও গাছ গাছালি জোরপূর্বক ভোগদখলে রেখে সে ভোগ করে।বাদিকে ভাগের অংশ দিতে চায়না। জমি ও গাছ ভাগ করার কথা বললে বাদির সাথে গোল যোগ করে,খুন করার হুমকী দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও মারপিট করার জন্য উদ্যত হয়। আসামীদের সাথে জায়গা জমি ও গাছ গাছালি ভাগ নিয়ে গোলযোগ শত্রুতার জের ধরে আসামীরা বাদিকে মারপিট খুন জখম করার হুমকি দিয়ে আসছিল। বাদির বাড়ির পাশে তাল গাছের মধ্যে ৬টি গাছে তাল হওয়ার পরে আসামীরা ২টি গাছের তাল কেটে নেওয়ার পরে ভাগ ওয়ারী মোতাবেক ৩ জুন সকাল সাড়ে ১০ টায় বাদি জনৈক রহিমকে নিয়ে একটি তালগাছ থেকে তাল কাটার সাথে সাথে আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তালকাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাতে ধারালো গাছিদা, বাঁশের লাঠিসহ হাফিজুর রহমানের হুকুমে বাদিকে একযোগে আক্রমন করে খুন করার হুমকী দিয়ে বাদির মাথায়, হাতে,পায়ে,বুকে,পিঠে,মাজায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্বজোরে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম ও ফোল জখম করে। বাদি আসামীদের মধ্যে দৌড়ে বাড়ির মধ্যে গেলে আসামীরা বাদির বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে পুনরায় বাড়ির মধ্যে মারপিট করে ওই সময় বাদির স্ত্রী মোছাঃ মহিমা (৪০),মেয়ে মোছাঃ রিম্পা (২২),মোছাঃ রিপা (২০) ঠেকাতে এগিয়ে আসলে তাদেরকে তাদেরকে মারপিট করে শ্লীলতাহানী ঘটায়। আসামীরা বাদির মেয়ের গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন,ঘরে ঢুকে  বিছানার  নীচে থাকা নগদ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে হাফিজুর রহমানের কাছে দেয়। ঘটনার সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে আসামীরা বাদি ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকী দিয়ে চলে যায়। অপরদিকে, হাফিজুর রহমান মামলায় বলেন, আব্দুল ওহাব তার আপন বড় ভাই, মহিমা বেগম ভাবী ও মোছাঃ রিম্পা খাতুন তার ভাইঝি। আসামীরা পরস্পর ভূমি দস্যুসহ সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তাদের সাথে দীর্ঘদিন পূর্ব হতে তাদের জমি জায়গার বিষয় নিয়ে শত্রুতা ও দ্বন্দ্ব চলে আসছে। যার কারনে আসামীরা বাদিসহ তার পরিবারের সদস্যদের মারপিট খুন জখম করার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকী ও ধামকীসহ ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এক পর্যায় গত ৩ জুন সকাল ১১ টায় আসামীরা বাদির নিজ জমিকে থাকা তালগাছ ও তাল পাড়াকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উল্লেখিত আসামীরাসহ তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামীরা হাতে দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে বাদির জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে বাদিকে লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বাদি প্রতিবাদ করলে আসামীরা বাদির প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে রিম্পা খাতুনের হুকুমে আব্দুল ওহাবের হাতে থাকা মেহগুনী গাছের মোটা ডাল দিয়ে বাদিকে খুন করার উদ্দেশ্যে মুখে আঘাত করে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। সাথে সাথে বাদি মাটিতে পড়ে গেলে ওহাব ও মহিমা বেগম পা দিয়ে পাড়াইয়ে বাদির শ^াসরোধ করার চেষ্টা করে এবং বাদির সর্ব শরীর কিল ঘুষি মেরে আহত করে। বাদির ছেলে সুজন আলী (২৮) ঠেকাতে এলে ওহাব তার হাতে থাকা মেহেগুনী গাছের মোটা ডাল দিয়ে তাকে খুন করার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ী ভাবে পিটিয়ে জখম করে। বাদির স্ত্রী মোছাঃ নুর নাহার বেগম (৪৭) ঠেকাতে  আসলে তাকে  রিম্পা বাশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। ওহাব কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানী ঘটায়। বাদির স্ত্রীর গলায় থাকা  ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, বাদির কাছে থাকা স্মার্ট মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। বাদির ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা হুমকী দিয়ে চলে যায়। হাফিজুর রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তার স্ত্রী ছেলে মেয়েদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।#