যশোর প্রতিনিধি
যশোর কুইন্স হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় রহিমা খাতুন (৭০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। নেবুলাইজারের ইনজেকশন ভেনে পুশ করার কারণে রহিমা খাতুনের মৃত্যু হয়। তিনি নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার শামুক খোলা গ্রামের বাসিন্দা। রহিমা খাতুনের ছেলে যশোর আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও জামাই একই ব্যাংকের নির্বাহী অফিসার সৈয়দ রকিবুজ্জামান এই অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তারা বলেন, নড়াইলের বাড়িতে রোববার ৩ এপ্রিল সকালে তাদের মা অসুস্থ বোধ করেন। তাদের মার আগেই বাল্বের সমস্যা ছিলো। ওই দিন বেলা ১২ টায় রহিমা খতুনকে কুইন্স হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার রহিমা খাতুনকে দেখে হসপিটালে ভর্তি করেন। তাদেরকে ৬ তলায় ৬১১ নাম্বার কেবিন দেয়া হয়। এরপর ডাঃ কাজল কান্তি ও ডাঃ সুমন কবির রহিমা খাতুনকে চিকিৎসা দেন। ডাক্তাররা বলেন, রহিমা খাতুনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। ডাক্তারদের পরামর্শে রহিমা খাতুনের সিটি স্ক্যান করা হয়। কিন্তু সিটি স্ক্যানে কোন সমস্যা ধরা পড়েনি। ডাক্তাররা বলেন বাল্বের সমস্যার কারণে রহিমা খাতুনের মৃদ্যু স্ট্রোক হয়েছে। চিকিৎসা দিলে আস্তে আস্তে রিকভারি হবে। রোগিকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন।
এদিকে আগের দিন মঙ্গলবার বিকেলে রহিমা খাতুনের হঠাৎ শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। ডাক্তার সুমন কবীরকে কল করা হলে তিনি বিকেলে হসপিটালে আসেন। রহিমা খাতুনকে দেখে শ্বাস কষ্টের জন্য নেবুলাইজার দিতে বলেন। এজন্য নেবুলাইজারে দেয়ার ইনজেকশন লিখে দেন। রোগীর স্বজনরা ইনজেকশন দোকান থেকে কিনে এনে দেন। কর্তব্যরত সেবিকা সীমা নেবুলাইজারের ইনজেকশন না বুঝে রহিমা খাতুনের ভেনে পুশ করে। পর পর দুইটা ইনজেকশন পুশ করার পর রহিমা খাতুনের হার্টবিট বেড়ে যায়। হার্টবিট প্রায় ২শ ছাড়িয়ে যায়। এ ঘটনার পর রহিমা খাতুনের জামাই সৈয়দ রকিবুজ্জামান কুইন্স হসপিটালে আসেন। ছেলে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার সালাহ উদ্দিন আহমেদ ডাক্তার সুমন কবীরকে হসপিটালে যাওয়ার জন্য ফোন করেন। ডাক্তার সুমন কবীর হসপিটালে এসে দেখেন রোগীর মুমুর্ষ অবস্থা। তিনি রোগীর হার্টবিট কমানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর ডাঃ সুমন কবীরের পরমর্শে রহিমা খাতুনকে জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। রহিমা খাতুনের হার্টবিট কমানোর জন্য একটি ইনজেকশন দেন। কিন্তু তাতেও হার্টবিট কমে না। রহিমা খাতুনের হার্টবিট কমাতে ব্যর্থ হয়ে ডাঃ সুমন কবীর খুলনা সিটি হাসপাতালে নেয়ার পরমর্শ দেন। এ সব করতে করতে রাত ১০ বেজে যায়। ততক্ষনে জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউতে রহিমা খাতুন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রহিমা খাতুনকে ভুল ইনজেকশন পুশ করা ওই সেবিকা সীমাকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে কুইন্স হসপিটালের ম্যানেজার মিঠুকে কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেনি। সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি অভিযোগ করলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।