যশোর প্রতিনিধি যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার কোরবান আলী পচা হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দিয়েছেন পুলিশ। সাতজনকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুরাতন কসবা ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম আদালতে এ চার্জশিট জমা দেন। অভিযুক্তরা হলেন, কাজীপাড়ার এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আমিরুল ইসলাম, খোলাডাঙ্গার সরদার পাড়ার সিরাজুল ইসলাম ওরফে চন্টু মিয়ার চার ছেলে রোকন হাসান ওরফে রনি, পিয়ারুজ্জামান ওরফে পিরু, মেহেদী ওরফে রানা, মনির হোসেন ওরফে মিরু, একই এলাকার জন বিশ্বাসের ছেলে রিচার্ড বিশ্বাস ও সজলপুর গ্রামের মোহাম্মদ লেলিনের ছেলে অপু। চার্জশিটে অপুকে পলাতক ও অপর ছয় আসামিকে আটক দেখানো হয়েছে।
মামলার তদন্তে উঠে আসে, নিহত পচাঁসহ অন্য আসামিরা একই সাথে চলাফেরা করতেন। আসামিরিচার্ড বিশ্বাস ও হোসেন নামের আরেক জন বেগম মিলের সামনে ডাক্তার সুসান্তের বাড়িতে কেয়ার টেকার হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার একমাস আগে রিচার্ড বিশ্বাসের সাথে হোসেনের গাছবিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে গোলোযোগ বাধে। রিচার্ড হোসেনকে সামন্য মারপিট করে। হোসেন এ বিষয়টি নিয়ে পঁচা ও আরেক আসামি পিরুর কাছে নালিশ করে। এরকয়েকদিনের মাথায় ডাক্তার সুশান্ত বিশ্বাস একটি জমি রিচার্ড বিশ্বাসকে দানপত্র দলিল করে দেয়। এঘটনা জানতে পেরে পঁচা ও পিরু একসাথে হয়ে রিচার্ড বিশ্বাসের কাছে চাঁদাদাবী করে। এরমধ্যে রিচার্ড বিশ্বাস ও হোসেনের মধ্যে গোলোযোগ মিটে যায়। এরপর এসব বিষয়নিয়ে পঁচা ও পিরু একে অপরকে দোষারোপ করে। একপর্যায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটায় চুয়াডাঙ্গা বাসস্টান্ড এলাকায় পচাঁর সাথে আসামি পিরু ও আমিরুলের কথাকাটাকাটি হয়। পচাঁ ওই দুইজনকে মারতে উদ্যত হয়। স্থানীয়রা এসে তাদেরকে ঠেকায়। এরপরই ১০ ফ্রেব্রুয়ারী সকালে রিচার্ডকে ডেকে সকলে একত্রিত হয়ে পচাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুরাতন কসবা সেবা সংঘ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সাব রেজিস্টার অফিস এলাকায় উৎ পেতে থাকে। সকাল সাড়ে ১১ টায় কোরবান আলী পচাঁ মোটরসাইকেলে চড়ে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় তার গতিরোধ করে। আসামি আমিরুল ইসলাম মারার হুকুম দেয়। পরে রনি প্রথমে ছুরি দিয়ে বুকের নিচে ও পেটে আঘাত করে। রনি আরেকটি চাকুদিয়ে একাধিক কোপ দেয়। এরপর পর্যায়ক্রমে অপু, রিচার্ড বিশ্বাস, পিরু, মিরুসহ অন্যরাও ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিক আঘাত করে। পরে পচা মাটিতে লুটিয়ে পরে। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসলে আসামিরা সটকে পরে। পরে পচাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে পচার মৃত্যু হয়। এদিকে, এঘটনায় নিহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম ১০ ফেব্রুয়ারি প্রথমে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়। মামলাটি প্রথমে পুলিশ পরিদর্শক এসএম আকিকুল ইসলাম তদন্ত করেন। তার বদলির পর বর্তমান পুরাতন কসবা ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম আদালতে এ চার্জশিট জমাদেন।