সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা থেকে আটক মুজাহিদুল ইসলাম ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এজেন্ট হিসেবে কাজ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সুজনসাহা বাজার থেকে মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীদের সহযোগিতায় এনএসআই সাতক্ষীরা অফিসের কর্মকর্তারা তাকে আটক করেন। আটককৃকত এই ভুয়া এনএসআই মুজাহিদুল ইসলাম কখনও দুদক কর্মকর্তা, কখনও এনএসআই অফিসার, কখনও ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের বিভাগীয় অফিসার, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে বিভিন্ন তদবিরের নামে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রতারক মুজাহিদুল ইসলাম (৩০) খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার নরনিয়া গ্রামের আশরাফ মোড়লের ছেলে।
সূত্র জানায়, ইসলামকাটি গ্রামের প্রতারণার শিকার আলতাফ হোসেনের কাছ থেকে টাকা নিতে আসলে স্থাণীয়দের সহায়তায় সুজনসাহা বাজার থেকে তাকে দুপুরে এনএসআই সাতক্ষীরা অফিসের উপ-পরিচালক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে এনএসআই এর একটি টিম তাকে আটক করেন। তারা বেশকিছুদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রাখছিলেন। মঙ্গলবার তারা তাকে নাতের তাকে আটক করেন। পরে সাতক্ষীরা ডিবি ও তালা থানা পুলিশের একটি টিম প্রতারক মুজাহিদকে থানায় নিয়ে যান।
প্রতারণার শিকার ইসলামকাটি আলতাফ হোসেন জানান, মুজাহিদুল এনএসআই পরিচয় দিয়ে প্রায় এক বছর ধরে চাকরি, বাড়ি কিনে দেওয়া ও বিদেশ পাঠানো এবং হজে¦ পাঠানোর কথা বলে আমি আমার ভাই শাহিনুর ও ইসলামকাটি গ্রামের দেলবার আলীর ছেলে শফিকুলের নিকট থেকে চার কিস্তিতে ১৩ লাখ গ্রহণ করেন। এছাড়া ডুমুরিয়া এলাকার হালিম মোল্যা, একই থানার কুলবাড়িয়া গ্রামের মোস্তা কামাল, একই গ্রমের গণি মোল্যার কাছ থেকে ২৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই প্রতারক মুজাহিদুল।
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সাতক্ষীরা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতারক মুজাহিদুল ইসলাম নিজেকে কখনও এনএসআই অফিসার, কখনও ইন্টেলিজেন্স অফিসার, কখনও আর্মি অফিসার এবং কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। তার মোবাইলে ও ফেসবুক থেকে বিভিন্ন ভুয়া আইডি কার্ড এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীর অফিসারদের ছবি, বিদেশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ছবি ও লোগো পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আনুমানিক ৪০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। তার দ্বারা প্রতারণার শিকার এমন সাত-আটজন ভুক্তভোগীর নাম ঠিকানাও পাওয়া গেছে।
সূত্রটি আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক মুজাহিদুল জানান, একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ট্রেনিং প্রদান করেছেন। তার ভাষ্যমতে গোয়েন্দা সংস্থাটি ইজরায়েলের মোসাদের সদস্যরা হতে পারেন। ট্রেনিং শেষে তাকে সারাদেশে ইন্টেলিজেন্স তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দিয়েছেন। এ জন্য তাকে মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। আটক মুজাহিদুল জঙ্গিবাদ বা বড় ধরনের কোনো প্রতারক দলের সদস্য মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। এটি রাষ্ট্র বা সরকার বিরোধী একটি বড় ধরনের চক্রান্ত হতে পারে মর্মে প্রতীয়মান হয়। তাকে সাতক্ষীরা জেলা ডিবি ও তালা থানা পুলিশের হেফাজতে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, প্রতারক মুজাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।