নবজাতক বিক্রির দায়ে চিকিৎসকসহ চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার

মাধঘোপা অনলাইন নিউজ ডেক্স: আশুলিয়ায় প্রতারণার মাধ্যমে এক দম্পতির নবজাতক বিক্রির দায়ে এক চিকিৎসকসহ ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে শিশুটিকে।

রবিবার রাতভর আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার নিউ মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও এর আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ সময় নবজাতক বিক্রি চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিক্রি হওয়া শিশুটিকে সিরাজগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার খোসগড় গ্রামের আব্দুল আজিজ খানের ছেলে ক্লিনিকের চিকিৎসক ও মালিক মোস্তফা কামাল(৩৯), টাঙ্গাইল জেলার জেলার মির্জাপুর থানার হাতরুড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ মাস্টারের ছেলে আবু হানিফ(৪০), নওগাঁ জেলার মান্দা থানার বৈলশিং গ্রামের মৃত কুতুবউদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে হানিফ বিন কুতুব(৪২), শরিয়তপুর জেলার সখিপুর থানার কাঁচিকাটা গ্রামের জালাল উদ্দীনের ছেলে মোহাম্মদ সুমন মিয়া (২৯) এবং নবজাতক কেনার দায়ে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাহপাড়া থানার নতুন দাতপুর গ্রামের মৃত বরাত আলীর ছেলে অয়েজুল।

ভুক্তভোগী নবজাতকের বাবা আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ১৭ মে আমার স্ত্রী শিখা বেগমের(২৬) প্রসবব্যথা উঠে। আমি তাকে নিউ মর্ডান ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আল্ট্রাসনোগ্রামের পরামর্শ দেন।

তাদের কথামতো আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক বলেন, নবজাতক উল্টো হয়ে আছে। মা ও শিশুর জীবন সঙ্কটাপন্ন, দ্রুত প্রসব করাতে হবে। ভুক্তভোগী ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কথায় রাজি হলে তাদের এক নারীকর্মী এসে পাশের ঘোষবাগ এলাকার একটি বাড়িতে আমার স্ত্রীকে নিয়ে যায়।

পরে সেই বাড়িতে তার ডেলিভারি হয় এবং একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এরপরে চিকিৎসক এসে বলেন, আমাদের মেয়ে খুব বেশি হলে তিন দিন বাঁচতে পারে। ১৫ দিন বাঁচাতেও অনেক টাকার দরকার। এসব ভুল বুঝিয়ে আমার স্ত্রীর কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে যায়। পরে সন্তান ফেরত চাইলে তারা ৫৫ হাজার টাকা দাবি করেন।

নবজাতকের মা শিখা খাতুন বলেন, আমি গার্মেন্টসে হেলপার হিসেবে কাজ করি। আমি তো অতো কিছু বুঝি না। উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে ওই ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার মিলে আমার মেয়েকে সিরাজগঞ্জে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। পরে থানায় খবর দিলে আমার সন্তানকে ফিরিয়ে আনে পুলিশ।

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদ বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমি, এসআই সুদীপ কুমার গোপ ও এসআই আসওয়াদুর রহমান ওই ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করি। সেখানে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িত উপস্থিত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে নবজাতটিকে উদ্ধার করে তার প্রকৃত মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। আসামিদের সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।