যশোর প্রতিনিধি: চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন যশোরের বর্ষীয়ান রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট আইনজীবী কাজী আব্দুস শহীদ লাল (৮২)। বৃহস্পতিবার ভোরে যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হার্ট ও কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর কারবালা গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, তিন মেয়ে, ভাইসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুমের ভাই কাজী আব্দুস সবুর হেলাল জানান, বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে কাজী আব্দুস শহীদ লাল নিজ বাসায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে যশোরের বেসরকারি হাসপাতাল কুইন্স হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সেখানে মারা যান।
বিকাল ৪টায় তার মরদেহ উদীচী প্রাঙ্গনে নিয়ে আসা হয়। এরপর মরদেহ নেয়া হয় যশোর আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গনে। সেখানে যশোরের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপর আসরবাদ যশোর ঈদগাহ ময়দানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। সেখানেই নামাজে জানাজা শেষে কারবালা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
ছাত্রজীবনে কাজী আব্দুস শহীদ লাল অবিভক্ত ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়নের (মতিয়া) নেতা ছিলেন। পরে তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ (মোজাফ্ফর), সিপিবি এবং শেষে গণফোরামের রাজনীতি করেন। বছর দশেক ধরে তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
আব্দুস শহীদ লাল যশোর আইনজীবী সমিতির তিনবার সভাপতি ও তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে সম্পৃক্ত ছিলেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ জানান, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলনে তাকে পাকিস্তান সরকার গ্রেফতার করে সাজা দেয়। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে, কৃষক শ্রমিকের দাবি আদায়ের সপক্ষে, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের সপক্ষে সমস্ত আন্দোলন সংগ্রামে তিনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ভূমিকা পালন করেছেন।
কাজী আব্দুস শহীদ লালের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম রন্টু, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি, খুলনা বিভাগীয় প্রধান নিজামদ্দিন অমিত।