অজ্ঞানের চিকিৎসক ছাড়াই ভুল সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে প্রসূতি সীমার মৃত্যু অভিযোগ

যশোর প্রতিনিধি: যশোরের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও মাতৃমঙ্গল ক্লিনিক বন্ধ ঘোষণা করেছেন । রোববার যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাসের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান দুটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও অজ্ঞানের চিকিৎসক ছাড়াই রোগীর অপারেশনের ভুল সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে প্রসূতি সীমা খাতুনের মৃত্যুর অভিযোগে মাতৃমঙ্গল ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন সিভিল সার্জন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল । এরআগে কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভুল অস্ত্রোপচারে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। আর নানা অনিয়মের কারণে আগেও একবার বন্ধ করা হয়েছিলো মার্তৃমঙ্গল ক্লিনিক।

জানাযায়, কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও মাতৃমঙ্গল ক্লিনিকের মালিক পক্ষ বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য নীতিমালা উপেক্ষা করে আসছিলো অনুমোদন পাওয়ার পর বিভিন্ন সময় ।চিকিৎসাসেবার নামে নানা অনিয়মের বিষয়টি জানতে পারেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।এছাড়াও সেখানে রোগীদের অপচিকিৎসাসহ প্রতারণা করা হচ্ছিলো।

গত শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিকে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের পর সীমা খাতুন (২৫) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় অনিয়ম ও প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সীমা খাতুন কেশবপুরের মঙ্গলকোর্ট গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী।

ভুল অস্ত্রোপচারে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লিনিক ভাংচুর করে। এসময় চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ ও ক্লিনিকের মালিক  আজিজুর রহমানের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এর আগেও কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভুল সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে মণিরামপুর উপজেলার পারখাজুরা গ্রামের মোশারফ হোসেনের স্ত্রী মনিরা খাতুন (২২) এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিলো।  এই ঘটনায় মৃতের স্বামী ওই সময় উপজেলা নির্বাহী  কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে পার পায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আরেকটি বিতর্কিত ও আলোচিত প্রতিষ্ঠান হলো মাতৃমঙ্গল ক্লিনিক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেবিকা ও প্যাথলজিস্ট ছাড়াই রোগীর অস্ত্রোপচার,  চিকিৎসাসেবা প্রদান ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম করা হচ্ছিলো। রোগীর অস্ত্রোপচারের সময় অজ্ঞানের চিকিৎসক থাকেন না। চিকিৎসাসেবার নামে মানুষকে বোকা বানিয়ে করা হচ্ছিলো বাণিজ্য। বিগত দিনে প্রতারণার অভিযোগে মাতৃমঙ্গল ক্লিনিক বন্ধ করা হলেও অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলো মালিকপক্ষ। এরই সূত্র ধরে রোববার (৭ আগস্ট) সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভুল সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সিভিল সার্জন আরও জানান, মাতৃমঙ্গল ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবার নামে মানুষের সাথে ভয়াবহ প্রতারণার করা হচ্ছিলো। অজ্ঞানের চিকিৎসক ছাড়াই রোগীর অস্ত্রোপচারের বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়েছে। এছাড়াও নানা অনিয়মের অভিযোগে মাতৃমঙ্গল ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়।