গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার তিন উপপরিদর্শক (এসআই)। তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওষুধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে ধরে নিয়ে অস্ত্র ও হত্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠে ওসি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওসির বিরুদ্ধে সরাসরি ঘুষের দুই লাখ টাকা গ্রহণের অভিযোগ উঠলেও শাস্তি পেয়েছেন তিন এস আই।
জানা যায়, ওষুধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে ধরে নিয়ে টাকা নেয়ার খবর বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হলে ঘটনার তদন্তে পুলিশের এডিসি (উত্তর) রবিউল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে গত রোববার রাতে কোনাবাড়ী থানার তিন এসআইকে প্রত্যাহার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যরা হলেন- কোনাবাড়ী থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) উৎপল সাহা, এসআই হামিদ মাহমুদ ও এসআই আবুল কাশেম।
ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তিন এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহারের ঘটনায় সমালোচনার জন্ম দেয়। তাদের প্রত্যাহারে হতবাক ওই তিন এসআই। ওসিকে বহাল রেখে তাদের প্রত্যাহার কেন করা হয়েছে তার উত্তর জানেন না কেউ!
এ ব্যাপারে প্রত্যাহারকৃত তিন এসআই জানান, নুরুল ইসলামকে আটকের পর অর্থ লেনদেনের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয় ওসির বিরুদ্ধে, কিন্তু ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান ওই তিন এসআই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার এক পুলিশ সদস্য বলেন, ওষুধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে আটক করে থানায় আনার পর রাত একটা থেকে দুইটার মধ্যে হাজতখানা থেকে তাকে ওসির শোয়ার কক্ষে (বেডরুমে) নেয়া হয়। সেখানে স্থানীয় বিএনপির কর্মী আজিজ ও শামীমের মধ্যস্থতায় দুই লাখ টাকায় আপোষরফার পর নুরুল ইসলামকে প্রসিকিউশন মামলা দেয়া হয়।
এদিকে নুরুল ইসলামের ভাষ্য, যে তিন এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। এমনকি অর্থ লেনদেনের বিষয়েও কোনো কথা হয়নি তাদের সঙ্গে। কয়েকটি পত্রিকায় ওই তিন এসআইয়ের নাম যোগ করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ তাদের নিয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি সংবাদ মাধ্যমে।
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, কোনাবাড়ি থানার ওই তিন এসআইকে ঘুষকাণ্ডের অভিযোগে নয়, অন্য কারণে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই কারণ অবশ্য তিনি বলেননি।
ওষুধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কোনাবাড়ীর ওষুধের দোকান থেকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পরে ৫ লাখ টাকা থেকে দেন-দরবার করে ২ লাখ টাকায় বিষয়টি সুরাহা হয়। টাকা দেওয়ার পরও তাকে ছেড়ে না দিয়ে মেট্রোপলিটন অধ্যাদেশ আইনে পরদিন ৪ জানুয়ারি সকালে আদালতে পাঠানো হয়। ওই দিনই আদালত তাকে জামিন দেন।