যশোর প্রতিনিধি: হামিদপুরে আসাদুজ্জামানের বাড়িতে গত ২৭ জুন দুপুরে হামলা চালিয়ে নগদ ১০ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনায় যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার ছেলে সামির ইসলাম পিয়াসের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এ মামলা রেকর্ড করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এর আগে কোতোয়ালি থানায় আসাদুজ্জামান মামলা করতে গেলে তা না নেয়ায় তিনি উচ্চ আদালতের দারস্থ হন। পরবর্তীতে হাইকোর্ট এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন থানাকে। মামলায় তারা ছাড়াও অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, গত ২৭ জুন দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার ছেলে পিয়াসের নেতৃত্বে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলযোগে আসা অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৫০-২০০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একটি এস্কেভেটর ও সাতটি ট্রাক্টরের ট্রলি নিয়ে আকম্মিকভাবে লুটপাট ও ভাংচুর করে। সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে প্রথমে বাদী বৃদ্ধ আসাদুজ্জামানকে মারপিট করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর তার বড় ছেলে আরমান হোসেন ও ছোট ছেলে জাফরীকে মারপিট করে মোবাইল ফোন সেট কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। এরপর বাদীর স্ত্রী ও তার ছেলের স্ত্রীরা এগিয়ে এলে তাদের মারপিট করে জখম করে। ঘরে ঢুকে হকিস্টিক দিয়ে মালামাল ভাংচুর ও লুটতরাজ চালায়।
সন্ত্রাসীরা ওয়ারড্রপ ভেঙে নগদ ১০ লাখ টাকা, প্রায় ৩০ লাখ টাকা মুল্যের ৩০ ভরি স্বর্ণের গহনা ও তিনটি গরু, ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ছয়টি ছাগল, নয় হাজার টাকা মূল্যের ছয়টি রাজহাঁস, পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের ১০টি মুরগি, ১২ হাজার টাকা মূল্যের ১৫টি পাতিহাঁস, এক লাখ টাকা মূল্যের ব্যাটারিসহ চারটি সোলার প্যানেল, ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ১০টি লেপ তোষক, তিন লাখ টাকা মূল্যের ১৫০ সেফটি মেহগনির সাইজ কাঠ, ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৬০ মণ গম, এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ৯০ মণ ধান, এক লাখ টাকা মূল্যের খৈল, এক লাখ টাকা মূল্যের ১৫ মণ তিল, ২৫ হাজার টাকা মূল্যের পানির একটি মোটরসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে।
সন্ত্রাসীরা বাদীর আট কক্ষ বিশিষ্ট ছাদের ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা ট্রাক্টরের ছয়টি ট্রলিতে করে লুটকৃত মালামাল নিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, ১৯৯৩ সালে শিল্প ব্যাংক থেকে নিজ নামে ক্রয়কৃত নিলামের সম্পত্তিতে তিনি ও তার পরিবার বসবাস করে আসছেন। ওই সম্পত্তির সকল বৈধ কাগজপত্র বাদীর কাছে আছে। অথচ বিবাদী শহিদুল ইসলাম মিলন ওই সম্পত্তি তার বেয়াই নূরুল ইসলামের দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে দখলের পাঁয়তারা করে আসছেন।