ঢাকা অফিস: অপহরণের পর জঙ্গি হিসেবে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে সাবেক কাউন্টার টেরোরিজম (সিটিটিসি) প্রধান এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামানসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন যুবদল নেতা মতিউর রহমান সাগর।
মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সিটিটিসির কর্মকর্তা সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার আতিকুর রহমান এবং সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার মামলার বাদী নড়িয়া উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিউর রহমান সাগর (৪৭) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) পাঁচজন আসামি করে পিটিশন করলে আদালত তিনজন আসামিকে আমলে নিয়ে মতিঝিল থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।
মামলার আবেদনে বাদী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ১৮ মে দুপুর ২টার দিকে বাদীকে মতিঝিল হোটেল শাকিল ইন্টারন্যাশনাল থেকে জোর করে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যায় আসামিরা। সেখানে ২৪ মে পর্যন্ত বাদীকে বন্দি করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়। এ সময় আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা বাদীর কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে জঙ্গি হিসেবে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়।
পরবর্তীতে জীবন বাঁচানোর জন্য বাদী তার ম্যানেজার মাসুদ দেওয়ানের সহযোগিতায় বিগত ওই বছরের ২২ মে সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলামের কাছে ৫০ লাখ টাকা তুলে দেন। বাকি ৫০ লাখ টাকার চাঁদার জন্য আসামিরা ২৪ মে পর্যন্ত মিন্টো রোডের টর্চার সেলে বাদীকে আটকে রেখে নির্যাতন করে। তখন বাদীর নিখোঁজের খবর পেয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একটি প্রেস ব্রিফিং করলে আসামিরা বাদীকে নড়িয়া থানায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর বাকি ৫০ লাখ টাকার জন্য অমানবিক নির্যাতন করে এবং শরীয়তপুর আদালতে একটা মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান করে।
বাদী মতিউর রহমান সাগর আরও অভিযোগ করেন, যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান করা হয়, সেই মামলাটি সংঘটিত হওয়ার সময়ে তিনি ওমরাহ-হজ্ব পালনের জন্য সৌদি আরবে ছিলেন এবং ওই ঘটনা নিয়ে সেই সময়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় নিউজ ছাপা হয়। একপর্যায়ে তাকে চাঁদার জন্য শেরেবাংলানগর থানায় একটা জঙ্গী মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে বিদেশ যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টের রিট দায়েরের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি গ্রহণ করেন।
মামলার বিষয়ে যুবদল নেতা মতিউর রহমান সাগর বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে জোর করে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনে আমার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার জীবন বাঁচাতে ৫০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। আমি অবশ্যই এসব পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার চাই।