ঢাকা অফিস: সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির সম্প্রচার।
প্রতিষ্ঠানের অপসারিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়েরের করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে শম্পা রহমানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করীম। আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট সময় টিভির এমডি ও সিইও পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অপসারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আবেদন করা হয়।
গত ১০ আগস্ট গুলশানের সিটি হাউসে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্ধারণ করা হয়। সভায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
একই সভায় পরিচালক শম্পা রহমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরে এ অব্যাহতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের কোম্পানি বেঞ্চে আবেদন করেন আহমেদ জোবায়ের।
এদিকে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রদানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই খবর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা সময় টিভিসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়া কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে। এতে সাময়িক সময়ের জন্য সময় টিভির সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। পরে আবারও সম্প্রচারে আসে সময় টেলিভিশন। এরপরই সামনে আসে মালিকানা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা সময় টেলিভিশন পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বাণিজ্যিক সম্প্রচারে আসে।
লাইসেন্স নেওয়ার সময় তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাগিনা আহমেদ জোবায়েরের নামে ৯৩ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সূত্রের তথ্যমতে, ৯০ শতাংশ শেয়ার কামরুল ইসলামের হলেও কাগজে-কলমে তা ছিল আহমেদ জোবায়েরের নামে।
অন্য অংশীদারদের মধ্যে কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলামের ৩ শতাংশ এবং নিয়াজ মোরশেদ ও তুষার আবদুল্লাহর ২ শতাংশ করে শেয়ার ছিল।
এরপর দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিটি গ্রুপ সময় টেলিভিশনে ৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। তাদের কাছে ৭৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ জোবায়েরের মাধ্যমে সাবেক মন্ত্রী কামরুলের পরিবারের কাছে থেকে যায়। পরে একপর্যায়ে জোবায়ের নানা ক্ষেত্রে একক সিদ্ধান্তে কাজ করার প্রতিবাদে তুষার আবদুল্লাহ সময় টিভি ছেড়ে দেন।