বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে নর্থইস্ট নিউজকে জানান সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকা টাওয়ার ডেক্স: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছড়িয়ে পড়া মারাত্মক সংঘর্ষে এক হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (বর্তমানে বস্ত্র ও পাট) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

শুক্রবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম নর্থইস্ট নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

ফোনালাপে ৪৫ মিনিটের এই সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকার কিছু জায়গায় এবং অন্যান্য জেলায় জনতার ওপর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনী গুলি চালায় অথবা প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে হামলা করে, যাদের বেশিরভাগই ছাত্র এবং যুবক ছিল।

৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন ইতোমধ্যেই সহিংসতার বিষয়ে নিবিড়ভাবে একাধিক তদন্ত শুরু করেছেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলছেন, একজন ‘মেগালোম্যানিয়াক’ (নিজেকে অতি বড় বা অতি ক্ষমতাশালী বলে ভাবা ব্যাক্তি) হিসেবে শেখ হাসিনা একটি অত্যাচারী রাজত্বের সভাপতিত্ব করে গেছেন। যেখানে মানুষের জীবনের মূল্য দেননি তিনি। একইসঙ্গে তার মন্ত্রিপরিষদের কিছু মন্ত্রী যেমন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বেশ কিছু সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা এই হত্যাযন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।

আসাদুজ্জামান কামাল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করেন এম সাখাওয়াত। কামালের দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া খুন, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনার ব্যাপক তদন্ত ১৪ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এই তদন্তগুলো হবে ১৯৪৫-পরবর্তী জার্মানির নুরেমবার্গ ট্রায়ালের আদলে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে পুলিশ বাহিনীর ইউনিফর্ম এবং প্রতীক পরিবর্তন করার নির্দেশ দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই প্রস্তাবের জন্য মন্ত্রিসভা অনুমোদনের প্রয়োজন হবে, আশা করি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নির্দেশ আসবে।’এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভারত সরকারের প্রতি আমার বার্তা হলো— আপনারা কি ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ নাকি শত্রুভাবাপন্ন একটি সরকার দেখতে চান? যে দেশ পরাশক্তি হয়ে উঠতে চায়, তাদের বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত হবে না। আমরা কোনো টুকরো টুকরো গ্যাং নই।