সেনাবাহিনীর সহায়তায় স্বল্প পরিসরে রাজধানীর ২৯ থানার কার্যক্রম শুরু

ঢাকা অফিস: প্রবল গণআন্দোলনের মুখে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়া পরই রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ থানায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জীবন বাঁচাতে আত্মগোপনে চলে যান পুলিশ সদস্যরা। এরপরই ভেঙে পড়ে দেশের বেশির ভাগ থানার কার্যক্রম। পাঁচদিন পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় স্বল্প পরিসরে থানার কার্যক্রম শুরু করেছে।

শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর প্রায় ২৯টি থানার কার্যক্রম শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। প্রতিটি থানায় পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় থাকছেন সেনা সদস্যরা। এদিন বেলা ১১টায় তেজগাঁও থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেনাবাহিনী ও পুলিশের কর্মকর্তারা।

Nagad_Ad

সেনাবাহিনী ২৫ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট কোম্পানি অধিনায়ক শাখাওয়াত খন্দকার বলেন, সেদিন (৫ আগস্ট) প্রচণ্ড জনমানুষের স্রোত ছিল। তাদের কন্ট্রোল করা যখন কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্বৃত্তরা যেভাবে পুলিশসহ মানুষ হত্যা করেছে, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি থানা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে হবে। তারা জনগণের সেবক। তাদের আবার রিফর্ম করার সুযোগ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তেজগাঁও থানায় কয়েকশত পরিবার আছে, পুলিশ সদস্যরা আছেন। থানায় অনেক অস্ত্র আছে। যেগুলো দুর্বৃত্তদের কাছে গেলে দেশ চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তখন আমরা থানা নিরাপত্তায় জোরদারের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও আমরা এ এলাকায় ছাত্র-শিক্ষক, ব্যবসায়ী, স্কাউট, বিএনসিসি ও আনসার বাহিনীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আমরা সমন্বয় সভা করেছি। পুলিশ বাহিনীকে রিফর্ম করতে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে।

তেজগাঁও থানার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আমাদের পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন। মানুষের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আজকে আমরা সামরিক বাহিনীর সহায়তায় পুলিশের সব কার্যক্রম শুরু করেছি। সব নাগরিকদের কাছে অনুরোধ আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।

তিনি বলেন, তেজগাঁও বিভাগে ৬টি থানার মধ্যে ৩টি থানার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত থানার স্বল্প পরিসরে কাজ চলছে। এরই মধ্যে থানাগুলোতে অনেক পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকিরাও আসতে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি দুপুরের মধ্যে আমাদের সব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দেবেন।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আমাদের কাছে নেই। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমাদের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জন্য আমরা অনেক ভুল করেছি। জনগণের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আসলে আমরা জনগণের সেবক। জনগণই আমাদের মূল। আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।