পুরো বংশ মিলেও ৪০০ কোটি টাকা হবে না দাবি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলমের

নিজেশ্ব প্রতিবেদক: পুরো বংশ মিলেও এত টাকা (চারশ কোটি) হবে না বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম। বিবিসি বাংলাকে এ কথা বলেছেন তিনি।

রবিবার চীন সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিএসসির এক গাড়িচালক কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।

ওই বক্তব্যের বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, তিনি মনে করেন না যে প্রধানমন্ত্রী তাকে ইঙ্গিত করে কথাগুলো বলেছেন। তিনি আরও বলেন। আমি দুর্নীতি করিনি। আমাকে অব্যাহতি দেওয়ার পর পরিচয়পত্রসহ আমার কাছে যা ছিল তা আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দিয়ে এসেছি। আর চারশ কোটি টাকা আমার চৌদ্দ গোষ্ঠীর টাকা ও সম্পদ মিলালেও তো হবে না।

তিনি আরও বলেন “আমার পুরো বংশ মিলেও তো এত টাকা হবে না। আর আমার কী আছে তাতো ট্যাক্স ফাইলেও উল্লেখ করেছি। আমি দুর্নীতি করিনি।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরই বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

কে জাহাঙ্গীর আলম

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামের মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম এখন চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং গত সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। নোয়াখালী-১ আসনের জন্য তিনি মনোনয়ন চেয়েছিলেন, পরে দল থেকে না বলায় প্রত্যাহার করেন।

নোয়াখালীর চাটখিলে মো. জাহাঙ্গীর আলম নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দিতেন। এ পরিচয় দিয়ে তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির সহ-সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। এ ছাড়া এলাকায় চাকরি-বাণিজ্য, কমিশন-বাণিজ্য, জমি দখল, ইটভাটা দখল, টেন্ডারসহ সন্ত্রাস চলতো তার নামে। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দাপট দেখিয়ে হুমকি দিয়ে অনিয়ম করে বেশ কয়েকজনকে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করান। জাহাঙ্গীর আলম তার ভাগনে শিপনের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ আছে। ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাকে বাঁচানোর গল্প বলে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। ওই পরিচয় দিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে তদবির করতেন। অবশেষে জাহাঙ্গীর আলমকে চাকরিচ্যুত করে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়।