তরুণী রিংকুর হত্যা রহস্য ছেলের সাথে গিয়ে মৃত্যু লাশ ফেলে আসে বাবা আটক ২

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় রিংকু (২০) নামে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উৎঘাটন করেছে পুলিশ। ওই তরুণীকে হত্যার অভিযোগে প্রেমিক নাইম (২২) ও বাবা আলাউদ্দিন (৫২) কে পৃথক স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে। বিয়ে করতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অটোরিকসা থেকে পড়ে গিয়ে রিংকু নিহত হয় গত সোমবার ২৭ নভেম্বর। এর পরের দিন নিহত তরুণীকে ভ্যানযোগে ফেলে দিয়ে আসে নাইমের বাবা ও ছেলে। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার ১ ডিসেম্বর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলসীগঙ্গা নদীর বেড়ি বাঁধের রাস্তার পাশে থেকে রিংকু নামের ওই তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর পুলিশ তদন্ত করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর দিনভর অভিযান চালিয়ে নাঈমকে রাজশাহীর পবা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এবং একই দিন তার বাবাকে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন থানার ওসির নেতৃত্বে এসআই বারেকসহ একদল পুলিশ সদস্য।

নিহত রিংকু আক্তার জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রাইকাল ইউনিয়নের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। আর গ্রেপ্তারকৃত নাঈম একই উপজেলার মাটিয়াকুরি গ্রামের আলাউদ্দীনের ছেলে এবং মৃত আব্দুল আজিজ মন্ডলের ছেলে আলাউদ্দীন। নিহত রিংকুর মা শাহিনা বেগম বাদি হয়ে বাবা-ছেলেকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

পুলিশ জানা ও প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, নিহত তরুণী রিংকু ও নাঈমের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তাদের দীর্ঘদিনের এই প্রেমের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবার। গত সোমবার ২৭ নভেম্বর সকালে তারা কোর্ট ম্যারেজ করে বিবাহের জন্য একটি অটো রিক্সায় করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর নওগাঁ কোর্টে অথবা রাজশাহী কোর্টে কোর্ট ম্যারেজ করা নিয়ে তর্ক বিতর্ক শুরু হয় তাদের মধ্যে। আর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সদর উপজেলার চকগৌড়ি নামক স্থানে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে অটো রিক্সা থেকে মেয়েটি পড়ে যায়। পড়ে গিয়ে মেয়েটির মাথা ও হাত পায়ে গুরুতর যখম হলে তাকে বাঁচানোর জন্য প্রেমিক নাঈম দ্রæত মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েটির অবস্থা খারাপ দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির পরামর্শ দেন এবং মেডিকেরে রেফার্ড করলে নাঈম ভয় পেয়ে তার বাবা আলাউদ্দীনের সাথে আলোচনা করে। বাবা তাকে রাজশাহী ইসলামি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। এবং দ্রæত এ্যাম্বুলেন্স যোগে রাজশাহী ইসলামি হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার রিংকুকে মৃত ঘোষণা করেন। নাঈম ও তার বাবা ভয় পেয়ে রিংকুর লাশটি ওই রাতের আধারে তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।

নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফয়সাল বিন আহসান বলেন, নিহতের ঘটনায় দুই জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসপি স্যারের দিক নির্দেশনায় থানা পুলিশের একটি টিম ২দিন অক্লান্ত পরিশ্রম ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। নাঈম ও রিংকুর মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। একটি কলেজ ব্যাগ, একটি ভ্যান জব্দ করে শুক্রবার তাদেরকে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।