যশোরে কবিরাজী চিকিৎসা নামে প্রতারণা প্রতারক জুয়েল শিকদার গ্রেফতার 

যশোর প্রতিনিধি
কবিরাজ সেজে প্রতারণা মূলকভাবে স্বর্ণের ও রুপার গহনা নিয়ে চম্পট হওয়া প্রতারক জুয়েল শিকদার (২৫) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (পিবিআই)  বিভাগের খাচায় বন্দি। সে পাবনা জেলার আমিনপুর থানার দূর্গাপুর নতুন পাড়া গ্রামের মনি শিকদারের ছেলে।
পিবিআ্ই সূত্রে জানাগেছে, জুয়েল শিকদার নিজেকে কবিরাজ বলে পরিচয় দিয়ে যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া মাদ্রাসা রোড এলাকার হুমায়ূন কবিরের স্ত্রী মোছাঃ হোসনেআরার ঘরে গত ১২ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১ টায় আসেন। যে সকল মহিলাদের দীর্ঘদিন বাচ্চা হয়না তাদের চিকিৎসা করে থাকে এবং তার কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহন করলে বাচ্চা হয়। এমন খবরে বাদিও বৈবাহিক জীবনের ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও বাচ্চা না হওয়ায় ভূয়া কবিরাজ প্রতারক ফকিরের কথা বিশ^াস করে বাদি তার বাসায় আনার পর প্রতারক জুয়েল শিকদার বাদিকে তাবিজ কবজ ও ভারনের মাধ্যমে (জিনের মাধ্যমে) সন্তানের সম্ভবনা করে দিবে বলে বিভিন্ন কথা বলে এবং বাদীর কাছে স্বর্ণের গহনা ও  রুপার গহনা চেয়ে বলে যে,স্বর্ণের ও রুপার গহনায় সে মন্ত্র পড়ে ফুক দিয়ে দিবে  যা পানিতে ভিজিয়ে ওই পানি পান করতে হবে এবং গোসল করতে হবে বলে। এই বলে প্রতারক জুয়েল শিকদার বাদিকে বিশ^াস অর্জন করে তার কাছ থেকে ৩টি স্বর্ণের আংটি,১টি স্বর্ণের চেইন,২ ভরি রুপার চেইন গহনা  হাতিয়ে নেয়। পরে বাদির সামনে স্বর্ণের ও রুপার গহনা পানিতে আধাঘন্টা ভিজিয়ে রাখে। পরে উক্ত পানিতে বিভিন্ন ঝাড়ফুক করে। এক পর্যায় জুয়েল শিকদার গহনা ভিজানো পানি বাদিকে নিয়ে বলে এই পানি পান করতে হবে এং গোসল করতে হবে। এরই মাঝে প্রতারক ও ভূয়া কবিরাজ ফকি জুয়েল শিকদার কৌশলে বাদিও কাছ থেকে উক্ত স্বর্ণেও গহনা পাল্টিয়ে নেয় এবং জুয়েল শিকদারের কাছে থাকা ইমিটেশনের গহনা পানির মধ্যে রেখে দিয়ে বাদিও স্বর্নলংকর নিয়ে পালিয়ে যায়। বাদি এক সময় বুঝতে পারেন তিনি প্রতারনার শিকার হয়েছেন। এর পর তিনি কোতয়ালি থানায় এজাহার দায়ের করেন। বাদি ১৫ অক্টোবর প্রতারনার বিষয়ে পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন এ কাছে আবেদন করেন। পুলিশ সুপার আবেদনটি ছায়া তদন্ত করতে পিবিআইয়ের এসআই রতনমিয়াকে নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআইয়ের এসআই জানতে পারেন প্রতারক জুয়েল শিকদার বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে মোটর শ্রমিক পরিচয় দিয়ে হোটেলে রুমভাড়া নেয়। এরপর ওই এলাকায় নিজেকে কবিরাজ পরিচয় দিয়ে জানায় সে প্যারালাইসিস রুগীসহ যে সব নারীদেও বাচ্চা হয়না তাদের চিকিৎসা করে থাকে। বিশেষ করে যে সব নারীদের দীর্ঘদিন যাবত বাচ্চা হয় না তাদের টার্গেট কওে চিকিৎসান নামে নারীদের নিকট হতে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা প্র্রতারনার মাধ্যমে গ্রহন করে গা ঢাকা দেয়। জুয়েল শিকদারকে গত ১৯ অক্টোবর বিকেলে পাবনা জেলার আমিনপুর থানাধীন নিজ বাড়ি থেকে পিবিআইয়ের চৌকসটিম গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তার দখল হতে দু’টি মোবাইল ও বাদির কাছ থেকে প্রতারনার মাধ্যমে নেয়া দু’টি রুপার চেইন জুয়েল শিকদারের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রতারকের কাছে পিবিআইয়েল টিম জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় বাদির কাছ থেকে নেয়া স্বর্ণের চেইন ও তিনটি আংটি স্থানীয় চব্বিশ মাইল বাজারস্থ রিফাত জুয়েলার্স এ বিক্রি করেছে। পরবর্তীতে উক্ত জুয়েল শিকদারের দেখানোমতে রিফাত জুয়েলার্স  দোকান হতে বাদির কাছ থেকে নেওয়া স্বর্ণালংকর জব্দ তালিকা করেন।  পরবর্তীতে বাদি নিজে বাদি হয়ে জুয়েল শিকদারের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় অভিযোগ করলে কোতয়ালি থানার মামলা নং ৭৮,তারিখ ১৯/১০/২৩,ধারা ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড রুজু হয়। গ্রেফতারকৃত প্রতারক জুয়েল শিকদারকে শুক্রবার ২০ অক্টোবর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক গোলাম কিবরিয়ার আদালতে সোর্পদ করা হলে সে স্বেচ্ছায় ফৌজদারি কার্য বিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে ঘটনার ব্যাপারে বর্ননা দেন।