সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও তিন দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। বছরের শেষে বার্ষিক পরীক্ষার সময়েও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের অন্য জেলায় বদলি করা হচ্ছে। পাশাপাশি শোকজও করা হচ্ছে বহু শিক্ষককে।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে রয়েছেন শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মোহাম্মদ সামছুদ্দীনকে নোয়াখালী থেকে লক্ষ্মীপুরে বদলি করা হয়েছে। তিনি নোয়াখালী সদর উপজেলার কুপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন।
এছাড়া বৃহস্পতিবার আরও ৪২ জন শিক্ষককে বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে।
শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো ১. সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল উন্নীত করে ১০ম গ্রেড প্রদান; অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখের প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আপাতত ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারি। ২. ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা দূর করা। ৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা।
পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সামছুদ্দীন বলেন, আমাকেসহ সারা দেশে অনেককে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
এর আগের দিন আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা চারজন শিক্ষককে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতির পরও তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে ২২ দিন পার হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ এবং ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর যৌথ ভার্চুয়াল মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা ‘তালাবন্ধ’ কর্মসূচি চলছে।
এদিন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষককদের কর্মবিরতি ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেয়। মন্ত্রণালয় জানায়, নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা চাকরি আইন, আচরণ বিধিমালা ও ফৌজদারি আইনের আওতায় শাস্তির মুখোমুখি হবেন।
এরপরও আন্দোলন চলায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।