কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পল্লী চিকিৎসকের চেম্বারে প্রেসার মাপাতে গিয়ে যৌনপীড়নের শিকার হয়েছেন এক গৃহবুধু। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রাতের আধাঁরে গ্রাম্য সালিশ বসায় স্থানীয় এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। সালিশে ১৫ হাজার টাকা জরিমানার সাথে বিশটি জুতাপেটা করা হয় চিকিৎসককে।
ঘটনাটি গত বুধবার উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের চাপড়া উত্তরপার এলাকায় এঘটনা ঘটে। পল্লী চিকিৎসক রিফাত মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক ও ওই এলাকার তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে।
ভিকটিমের পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, বুমিবুমি ভাব হওয়ায় গত বুধবার সন্ধায় এক গৃহবুধু চাপড়া উত্তরপার এলাকার পল্লী চিকিৎসক রিফাতের কাছে প্রেসার মাপতে যায়। চিকিৎসক এসময় চেম্বারের ভিতরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং গৃহবধূর শরীরের বস্ত্র সড়িয়ে প্রায় সিংহভাগ বিবস্ত্র করে ফেলেন।
এরপর গৃহবধূ চিকিৎসককে ধাক্কা মেরে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে যায় এবং স্বজনদের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন। পরে স্বজনরা চিকিৎসকের পরিবারকে জানালে স্থানীয় মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল প্রশাসনকে জানিয়ে ওই রাতেই চিকিৎসকের বাড়িতে এক সালিশ বসান। সালিশে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ২০ টি জুতাপেটা ঘোষণা দেন প্রধান শিক্ষক।
এবিষয়ে ভিকটিম বলেন, হঠাৎ বুমিবুমি লাগছিল। প্রেসার মাপার জন্য রিফাত ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। ডাক্তার চেম্বারে নিয়ে দরজা বন্ধ করে কল লাগিয়ে কাপড় প্রায় সব খুলে ফেলার উপক্রম করে। এসময় আমি ধাক্কা মেরে কাঁদতে কাঁদতে চলে গিয়ে খালাকে জানায়। তিনি আরো বলেন, জলিল মাষ্টার বুধবার রাতেই বাড়িতে সালিশ ডাকে। সালিশে আমাকে কোন কথা বলতে দেয়নি।
এবিষয়ে রিফাতের বাবা মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ছোট খাঁটো বিষয়। বাদ দেন। আমার হেডমাস্টার বিষয়টি সমাধান করে দিছেন।
এঘটনায় সালিশ বসানোর কথা স্বীকার করে মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সংঘর্ষের সম্ভাবনা ছিল। তাই বুধবার বাদ এশা এক সালিশ করা হয়। সালিশে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ২০ টি জুতার বারি দেওয়া হয় চিকিৎসককে।
এবিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, কোন মামলায় কেউ সালিশ করতে পারেনা। এঘটনাটি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।