উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা প্রতারক রংপুরের রাশেদ যশোরে সিআইডির খাঁচায়

বিশেষ প্রতিনিধি
মোবাইল ফোনে নিজেকে কখনও আকিজ জুট মিলস্ এবং কখনও জনতা জুট মিলস্  এর কর্মকর্তাসহ সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের মূল হোতা মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে রাশেদ (৩৪) কে গ্রেফতার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) যশোরের একটি বিশেষ চৌকসদল। গত সোমবার ১৯ জুন রংপুর জেলার হারাগাছা ও গঙ্গাচড়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়। সে রংপুর জেলার হারাগাছা থানার জম চওড়া গ্রামের মৃত আবু আওয়াল এর ছেলে। এ সময় তার দখল হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি স্মার্ট ফোন ও একটি বাটন ফোন যার মোবাইল নাম্বার ০১৭৬১৪৬০৭২৯ সীমসহ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রতারক মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে রাশেদ প্রতারণা স্বীকার করে মঙ্গলবার ২০ জুন দুপুরে আদালতে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি দিয়েছে বলে সিআইডি দপ্তর থেকে নিশ্চিত করেছে।
সিআইডি যশোর দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, মোবাইল ফোনে আকিজ জুন মিলস্ এবং জনতা জুট মিল্স এর কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায় সংক্রান্তে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে  আসামী করে গত ১৬ এপ্রিল যশোরের অভয়নগর থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নং ২১,তারিখ ১৬/০৪/২৩ ইং ধারা ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড। মামলা হওয়ার পর বিষয়টি বিশেষ পুলিশ সুপার সিআইডি যশোর এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাধানে যশোর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং সিআইডি হেডকোয়ার্টাস,ঢাকা এর অনুমোদনক্রমে যশোর সিআইডি দপ্তরে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলামকে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়। সিআইডি যশোর জেলার বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ মহিউদ্দীন আহমেদ এর সার্বিক দিক-নিদের্শনায় যশোর সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি বিশেষ চৌকস টিম গত ৩০ মে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়কারী চক্রের সহযোগী সদস্য মাসুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে। সে রংপুর জেলার সদর উপজেলার ময়নাকুটি গ্রামের আব্দুল করিম মিয়া ওরফে সেন্টুর ছেলে। এর পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোরের বিশেষ পুলিশ সুপার মহিউদ্দীন আহমেদ এর  দিক নির্দেশনায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে যশোর সিআইডি দপ্তরে কর্মরত একটি বিশেষ চৌকস দল সোমবার ১৯ জুন দিনভর রংপুর জেলার হারাগাছা ও গঙ্গাচড়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতা মোসাদ্দেক হোসেন রাশেদ গ্রেফতার করে। রাশেদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সিআইডি  তদন্তে পান গ্রেফতারকৃত রাশেদ দীর্ঘদিন যাবত পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোন আকিজ জুট মিলস্ ও জনতা জুট মিলস্ এর কর্মকর্তা এবং উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তাদের নাম ও পদবী ব্যবহার করে ইএনও, ম্যাজিস্ট্রেট,পুলিশ অফিসার,ইউপি সচিব পরিচয়ে বিভিন্ন অসৎ উপায়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল। সে গত ১ এপ্রিল হতে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত আকিজ জুট মিলস্ এর চেয়ারম্যান,আকিজ গ্রুপের অভয়নগর ফ্যাক্টরীর নির্বাহী পরিচালক শেখ আব্দুল হাকিম ও ম্যানেজার (মেকানিক্যাল)বছির আহম্মেদসহ জনতা জুট মিলস্ লিমিটেড এর নির্বাহী পরিচালক হেলাল আহম্মেদসহ বিভিন্ন জুট মিলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিচয়ে ০১৭৬১৪৬০৭২৯ নাম্বার মোবাইল ব্যবহার করে আকিজ জুট মিল হতে ৫লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তাছাড়া, আকিজ জুট মিলস্ লিমিটেডের ব্যবসা সংশ্লিষ্ট গ্লোরী ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর মোমিনুল ইসলাম,একাউন্ট অফিসার মিলন কুমার ঘোষ, সিনিয়র অফিসার  আমিনুল ইসলাম, মার্কেটিং অফিসার মাসুদুর রহমানের পরিচয়ে তাদের অফিসের অন্যান্য স্টাফদের নিকট হতে প্রতারণা মূলকভাবে ২০লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে সিআইডি যশোর দপ্তর সূত্রে থেকে বলা হয়েছে।