প্রধান হিসাব রক্ষক পদে চাকরি দেয়ার নামে সাড়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে প্রতারণা আদালতে মামলা

যশোর প্রতিনিধি প্রধান হিসাব রক্ষক পদে চাকরি দেয়ার নামে সাড়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। চৌগাছার সলুয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজেন সাবেক সভাপতি, প্রিন্সিপ্যাল ও একজন পুলিশ ইন্সপেক্টকে আসামি দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার গতকাল সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর স্ত্রী রাশিদা বেগম এই মামলা করেছেন। বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিশেষ পুলিশ সুপার সিআইডি পুলিশ যশোরকে আদেশ দিয়েছেন।
আসামি সলুয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজের সাবেক সভাপতি এবং সলুয়া বাজার সোনালী ব্যাংকের পাশে মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে আব্দুল মান্নান, একই কলেজের প্রিন্সিপ্যাল এবং মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের মৃত হাজারী লাল মন্ডলের ছেলে সন্ধি মন্ডল ও যশোর সদর উপজেলার দোগাছিয়া গ্রামের শামছুদ্দিন মন্ডলের ছেলে এবং গাজীপুর পুলিশের ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা হেলা।
বাদী মামলায় বলেছেন, তার বড় থেকে নাজমুল হোসেন অনার্স পাস করে বেকার অবস্থায় বাড়িতে ছিলেন। নাজমুল হোসেনের দুর সম্পর্কের মামা হয় আসামি গোলাম মোস্তফা হেলা। সে কারণে নাজমুলকে চৌগাছার সলুয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজে প্রধান হিসাব রক্ষক পদে একটি চাকরি দিতে পারবেন বলে জানানো হয়। তবে ওই চাকরি দিতে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। এক পর্যায় দেনদরবার করে ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন বাদী। এরই মধ্যে আসামিদের ওই ঘুষের টাকা দিতে বাদী জমি বন্ধক, ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ এবং বাড়ি থেকে গরু, ছাগল ও গাছ বিক্রি করা হয়। সে মোতাবেক ২০১৯ সালের ১ মে সকাল ১০টার দিকে আসামি গোলাম মোস্তফা হেলা বাদীর বাড়িতে যান। এসময় তাকে আপ্যায়ন করে ছেলের চাকরির জন্য ঘুষের দুই লাখ টাকা দেন। ৪ মে আসামি আব্দুল মান্নান ও প্রিন্সিপ্যাল সন্ধি মন্ডল বাদীর বাড়িতে যান। এসময় ওইদিন সকাল ১০টার দিকে তাদের দুইজনের কাছে ছেলের চাকরির ঘুষ বাবদে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। ওই বছরের ১৬ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা শেষে নাজমুল হোসেনকে সলুয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজে প্রধান হিসাব রক্ষক পদে চাকরির নিয়োগপত্র দেয়া হয়। এরপরে নাজমুল সেখানে যোগদান করেন। কিন্তু বেতন হয়না। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন কলেজটি ডিগ্রি এমপিওভুক্তি নয়। যে কারণে সেখানে উপাধ্যক্ষের হিসাব রক্ষক ওই কলেজে নিয়োগদানের কোন সুযোগ নেই। আর নিয়োগ দিলেও তার বেতন হবেনা। ফলে কয়েকমাস ধরে নাজমুল আসামিদের কাছে ধর্না দিয়েও টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হন। গত ৫ জুন বাড়িতে ডেকে এনে আসামিদের কাছে ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা ফেরৎ চান বাদী। এসময় টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকার করায় আদালতে এই মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ১ জুন চৌগাছার পুড়াহুদা গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে ৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা হেলার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন। ওই মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে। #